প্রতিবছর শীতের কিছুটা আগেই বাজারে আসে শীতকালীন নানা সবজি। এ সময় বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যায় এসব সবজি। কিন্তু এ বছর বাজারে শীতকালীন সবজি চলে এলেও এখনও বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারে কোনও প্রকার তদারকি না থাকায় এমন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে রাজধানীর বাজারগুলো। তবে বিক্রেতারা বলছেন শীতকালীন সবজি বাজারে আসলেও এখনও সরবরাহ ঘাটতি রয়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে সবজির দাম আরও কমবে। গতকাল শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর নিউ মার্কেট কাঁচা বাজার, কেল্লার মোড় কাঁচা বাজার, হাতিরপুল এবং আনন্দবাজারসহ কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নিউমার্কেট এবং হাতিরপুল কাঁচা বাজারে দেখা গেছে শীতকালের সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ১০০ থেকে ১৭০ টাকা প্রতি জোড়া। লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা দামে। এছাড়া অন্যান্য সবজির মধ্যে কাঁচা পেপে ৪০, গোল বেগুন, কাকরোল, টমেটো, কচুমুখী বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০ টাকায়। দেশি শসা, করলা, মুলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। পটল, চিচিঙ্গা ও ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এছাড়া গাজর ১২০ টাকা, শিম ১৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, ধনেপাতা ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের একাধিক সংস্থা থাকলেও কাঁচা বাজার নিয়ন্ত্রণে কোনও তদারকি চোখে পড়ে না কখনও। নিউ মার্কেট কাঁচা বাজারে মৌসুমী ঘোষ নামে এক ক্রেতা বলেন, এখন শীতের সবজি বাজারে উঠেছে তবুও চড়া দাম, এটা অস্বাভাবিক। বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়লে বিভিন্ন সংস্থা সেগুলো তদারকি করে। কিন্তু কাঁচা বাজারে এরকম কোনও তদারকি কখনও চোখে পড়েনি।
বিক্রেতারা বাড়তি দামের বিষয়টি স্বীকার করে বলছেন, সবজির সরবরাহ কম থাকায় তুলনামূলক দাম বেশি। তবে কয়েকদিন পর বাজারে এসব সবজির সরবরাহ বাড়ার পাশাপাশি দামও কমবে। হাতিরপুল বাজারে সবজি ব্যবসায়ী রবিন অধিকারী আলমগীর বলেন, এখন শীতের সবজি মাত্র উঠা শুরু করেছে। কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে বাজারে আসবে, তখন দাম আরও অনেক কমে যাবে।
এদিকে বাজারে আলু ও পেঁয়াজের দাম অস্থিতিশীল থাকলেও অন্যান্য মুদি মালামালের দাম অপরিবর্তনীয় রয়েছে। এছাড়া মাছ ও মাংসের বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় স্থিতিশীল রয়েছে। মাছের বাজারে রুই ও কাতল আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষের কৈ ৩০০ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি কৈ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। এছাড়া পাবদা ৪০০, তেলাপিয়া ২৫০ এবং পাঙ্গাস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২০০ টাকায়। তবে অন্যান্য দিনের মতোই চাষের মাছের চেয়ে নদীর মাছের দাম ছিল তুলনামূলক বেশি।