রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
আজ মধ্য রাত ২২দিনর অভিযান শুরু শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন-মামুনুল হক ডাকবাংলা ব্যবসায়ী কমিটির পরিচিতি সভা ও অভিষেক বলদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই অন্যের জমি দখলে নেওয়ার অভিযোগ নড়াইলে মসজিদ-মন্দির একই স্থানে চলছে নামাজ ও পূজা রায়গঞ্জে সামান্য বৃষ্টিতে বিদ্যালয় মাঠে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিভিন্ন পূজা মন্ডবে আর্থিক অনুদান জামালপুরে সিডসের উদ্যোগে দুর্নীতিবিরোধী প্রশিক্ষণ দর্পন বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো শারদীয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শেরপুরে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে জাকের পার্টি

ধনবাড়ীতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষক

জহিরুল ইসলাম মিলন (ধনবাড়ী) টাঙ্গাইল
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় এখন চলছে আমন ধান কাটার ভরা মৌসুম। সারা দেশে একযোগে ধান কাটা ও মাড়াই হচ্ছে। অথচ অবরোধের কারণে বাজারে ধানের ক্রেতা নেই। মাঠের সোনারঙা ধান এখন গড়াগড়ি খাচ্ছে কৃষকের ঘর ও উঠানে। মৌসুমের শুরুতেই ধানের ভয়াবহ দরপতন চলছে। টানা অবরোধ ও অগ্নিকা-ের কারণে চালকল মালিক ও পাইকাররা বাজার থেকে ধান কিনছেন না। পথে ধান বোঝাই ট্রাকে আগুন দেওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন মিল মালিকরা। এতে কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। তারা বলছেন, অবরোধ তাদের পাকা ধানে মই দিচ্ছে। অবরোধের কারণে হাটে মোকামে ওঠা নতুন আমনের বিক্রিও প্রায় বন্ধ। খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, যেখানে পণ্য পরিবহণে আগে দিনে ১০-১২ টি ট্রাক গাড়ি চলত, বর্তমানে তা ৫-৬ থেকে টিতে নেমে এসেছে। সবজি পরিবহণ না করতে পেরে ক্ষুব্ধ কৃষক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহে প্রতি মণ আমন ধানের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। গতকাল ধনবাড়ী ধানের বাজারে চিকন ধান এক হাজার টাকা মণে বিক্রি হয়েছে। অথচ গত সপ্তাহ আগে এ জাতের ধানের দাম ছিল ১১শ’ টাকা মণ। স্থানীয় ধান ব্যবসায়ী আবু সামা বলেন, শম্ভুগঞ্জ, শেরপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, মানিকগঞ্জের অটো রাইসকলগুলো প্রতিবছর ধানের মৌসুমে ট্রাক নিয়ে ধান কিনতে আসেন, এবার অবরোধের কারণে তারা আসতে পারছেন না। মিল মালিকদের কাছ থেকে টাকা না পাওয়ায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ধান কেনা শুরু করেননি। ফলে ধানের বাজারে মন্দাভাব চলছে। এদিকে সরকার ১২শ’ টাকা মণে আমন ধান কেনার ঘোষণা দিলেও পণ্য পরিবহণ সংকটের কারণে কৃষকরা এ সুবিধা নিতে পারছেন না। আগাম শীতের শাকসবজি বিক্রির উপযুক্ত সময় এখন। খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়ায় মাছ ধরে বিক্রির সময় এখন। পণ্য পরিবহণ বন্ধ হয়ে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষিখাতের সঙ্গে জড়িতরা। সবজি বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। অবরোধের থাবায় মাঠে মাঠে শীতের সবজি নষ্ট হচ্ছে। অবরোধের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ভোক্তাদের কাছে ঠিকমতো পৌঁছাতে পারছে না শীতকালীন সবজি। আবার শহরে যারা সবজি কিনে খান, তাদের খরচও বেড়ে যাচ্ছে। এবারের মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও তার বেশিরভাগই নষ্ট হতে যাচ্ছে পণ্য পরিবহণ বা ট্রাক সংকট তীব্র হওয়ার ফলে। ধনবাড়ী উপজেলার কৃষক নেতা বলেন, কৃষিপ্রধান ও কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে হরতাল-অবরোধ করে কৃষিপণ্য তথা কৃষককে সংকটে ফেলা হচ্ছে। আমরা কৃষকরা তো কোনো দলের না, রাজনীতিও করি না। আমরা সবজি উৎপাদন করি। কিন্তু আমরা সেই সবজি বিক্রি করতে পারছি না। গাড়িতে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এবার বেপারীরাও আসছেন না। ধনবাড়ীর সবজি ব্যবসায়ী ফরিদ প্রতিদিন সবজি ভর্তি ট্রাক নিয়ে যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে। অবরোধের কারণে তিনি সবজি নিয়ে ঢাকায় যেতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি জানান, অবরোধে ধনবাড়ী সবজির মোকামে ধস, ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষক। অবরোধের কারণে পরিবহণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় কেউ শাকসবজি কিনছে না। ঢাকা থেকে আসছেন না পাইকারি ব্যবসায়ীরা। দেশে সারা বছরে যে ফসল হয়, তার প্রায় ৮০ শতাংশ উৎপাদিত হয় নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এই ছয় মাসে। মাঠে মাঠে আমন ধান কাটা হচ্ছে, চলছে বোরোর বীজতলা প্রস্তুতির কাজ, অনেক এলাকায় গম ও আলুর চারা রোপণ শুরু হয়েছে। গ্রামে গ্রামে চলছে ভুট্টা ও সরিষা চাষের কার্যক্রম। অবরোধ একদিকে কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না, অন্যদিকে সরকারের কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার পৌঁছানো যাচ্ছে না। পণ্য পরিবহণ বন্ধ থাকায় দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে আসন্ন বোরো মৌসুমের সেচ কাজের জন্য মাঠ পর্যায়ে ডিজেল পরিবহণ সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়াও সার পরিবহণেও সংকট তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান বলেন, শাকসবজি-ফলমূল যেটা উৎপাদন হয় তার ৩০ শতাংশ মাত্র যারা উৎপাদন করে তারা খায়, অথবা গ্রামের বাজারে বিক্রি হয়, বাকি ৭০ শতাংশ ঢাকাসহ বড় শহরে চলে আসে। চলমান অবরোধ পরিস্থিতিতে এ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এবার যে পরিমাণ শাকসবজি উৎপাদন হয়েছে তার অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে। ফলে কৃষকেরাও লাভ পাবেন না। কামাল, ফরহাদ এর মতো অনেক ছোট পাইকার গ্রাম থেকে ট্রাকে করে কৃষিপণ্য শহরে এনে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখতে পেলেও এবার পণ্য পরিবহণের জন্য ট্রাক পাচ্ছেন না। ট্রাক ড্রাইভার ও ট্রাকের মালিকরা বলছেন, ব্যাংক ঋণ নিয়ে ট্রাক কেনা হয়েছে, দুর্বৃত্তরা ট্রাকে আগুন দিলে পথে বসতে হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com