প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপারের নিষেধাজ্ঞাকে ভয় পান না বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ভিসা নীতির তোয়াক্কা করেন না। শেখ হাসিনা আটলান্টিকের ওপারের স্যাংশনকে (নিষেধাজ্ঞা) ভয় পান না। তিনি ভয় পান একমাত্র সৃষ্টিকর্তাকে। তিনি ভালোবাসেন দেশের জনগণকে। বাংলাদেশের মাটি ও জনগণ আমাদের শক্তির উৎস। কোনো বিদেশি শক্তির হুমকিকে আমরা পরোয়া করি না—এটা শেখ হাসিনার কথা।’
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলায় ছাত্রলীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। ক্ষমতাসীন দলের ভ্রাতৃপ্রতিম এ সংগঠনের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের।
চিরতরে বিএনপিকে লাল কার্ড দেখানোর আহ্বান জানিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা (বিএনপি) অপেক্ষায় আছে আটলান্টিকের ওপার থেকে স্যাংশন আসবে, নিষেধাজ্ঞা আসবে। ভুয়া, ভুয়া।’ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও এ সময় সমস্বরে ‘ভুয়া’ উচ্চারণ করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের জন্য শেখ হাসিনার উপহার এক কোটি বেকার যুবকের কর্মসংস্থান। প্রতিবছর ২০ লাখ করে ৫ বছরে ১ কোটি। খেলা হবে।’
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ফাইনাল খেলা’ আখ্যায়িত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি কোথায়, কোথায় পালিয়েছে? পালিয়েছে কেন? ফাউল করে লাল কার্ড (খেয়েছে)। পালিয়েছে বিএনপি। এখন বোমা মারবে। তারেক রহমান (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) টেমস নদীর ওপার থেকে নির্দেশ দিয়েছে বোমা মেরে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে। ভুয়া।’ এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও সমস্বরে ‘ভুয়া’ বলেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপি হচ্ছে ভুয়া, ওদের আন্দোলন, এক দফা, ৩২ দল—ভুয়া। মানববন্ধন, পদযাত্রা, আন্দোলন—সব ভুয়া। এখন করে অবরোধ। বিএনপির অবরোধ-হরতাল—কিছুই মানে না পাবলিক (জনগণ)। বিএনপি হচ্ছে ভুয়া। খেলা হবে, খেলা হবে, খেলা হবে।’ এ সময়ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরাও সমস্বরে বলেন ‘খেলা হবে’।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘লুটপাটের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। বিএনপির সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে। দুর্নীতিবাজেরা সাবধান, লুটেরারা সাবধান, খেলা হবে। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। প্রস্তুত? ৭ জানুয়ারি সারা দিন খেলা হবে। ৭ তারিখ সকাল-সন্ধ্যা খেলা হবে। সব জেলা-উপজেলা-বিভাগে, সারা বাংলায় খেলা হবে একসাথে।’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ছাত্ররাজনীতিকে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আকর্ষণীয় করে তোলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মেধা, সাহসে, পড়াশোনায়, চলাফেরায়, পোশাকপরিচ্ছদে স্মার্ট হতে হবে। স্মার্ট মানে ভাষণ দেওয়া নয়।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, সাধারণ ছেলেমেয়েদের বোঝাতে হবে, এই দেশ ভালো লোকদের হাতে থাকলে ভালো হবে। রাজনীতিতে মেধাবীদের আসতে হবে। তা না হলে দেশের রাজনীতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। চরিত্রবানদের রাজনীতিতে আসতে হবে। না হলে রাজনীতি চরিত্রহীন হয়ে পড়বে। ভালো লোক ক্ষমতায় এলে, এমপি-মন্ত্রী হলে দেশ ভালো চলবে। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। সমাবেশ স ালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ। বেলা ১১টায় ছাত্রলীগের এ সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় দুপুর ১২টার দিকে। ছাত্রলীগের সাবেক শীর্ষ নেতা মাঈনুদ্দিন হাসান চৌধুরী, ইসহাক আলী খান, মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী, সাইফুর রহমান, গোলাম রাব্বানী প্রমুখ অপরাজেয় বাংলার সামনে স্থাপিত মে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ছিলেন। সমাবেশে ছাত্রলীগের রাজধানীর বিভিন্ন শাখার নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। পরে ক্যাম্পাস থেকে শোভাযাত্রা বের করে ছাত্রলীগ। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল মোড় ও জিরো পয়েন্ট হয়ে গুলিস্তানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা।