জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা এখন বসবাসের অযোগ্য। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, অক্টোবরে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলার পর গাজা পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। গত তিন মাস ধরে গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় সাড়ে ২২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। গ্রিফিথস এক বিবৃতিতে বলেন, ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে গত তিন মাসে গাজা একটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। চারদিকে হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই। তিনি বলেন, গাজার সর্বত্রই এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সেখানকার সাধারণ মানুষ টিকে থাকার জন্য প্রতিদিন নানা রকমের হুমকির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে বিশ্ব শুধু এই দৃশ্য বসে বসে দেখছে।
মানবাধিকার সংস্থার এই প্রধান কর্মকর্তা বলেন, ২০ লাখের বেশি মানুষকে সহায়তার এক জটিল দায়িত্ব তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ ইতোমধ্যেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণা লীয় খান ইউনিস শহর, রাফাহ এবং মধ্য গাজার কিছু অংশে রাতভর বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গাজার দুই স্থানে রাতভর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, শনিবার সকালে গাজার মধ্যা লে অবস্থিত দেইর আল বালাহ’র আল হাকার এলাকা এবং দক্ষিণা লীয় খান ইউনিস শহরের আল মানারার দুটি বাড়িতে বিমান হামলা চালানো হয়।
স্থানীয় বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে ওয়াফার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খান ইউনিসের আল মানারার একটি বাড়িতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। এতে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। হামলায় আহতদের খান ইউনিসের ইউরোপীয়ান হসপিটালে নেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে গাজার দেইর আল বালাহ শহরের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় আরও তিনজন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। শুক্রবার সকাল থেকে এখন পর্যন্ত গাজার মধ্যা লে কয়েক দফা হামলায় ৩৫ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কমপক্ষে ৬০ জন। এর আগে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) গাজার নুসেইরাত, মাগাজি ও বুরেজ শরণার্থী শিবিরসহ বেশ কিছু জায়গায় হামলা চালায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।