৭ই জানুয়ারির নির্বাচনের ফলাফল যে পূর্বনির্ধারিত তা প্রকাশ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাঙ্গীর আলম গত রোববার রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় ফাঁস করে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীরের সঙ্গে আলাপের সময় ইসি সচিবকে বলতে শোনা যায়, ‘যেয়ে ঘুমাইয়া যামুগা। এখানে বসে থেকে লাভ আছে? সবাই রেজাল্ট জানে। ৬৪ ডিসিদের মেসেজ আছে। ৬৪টা জেলার রেজাল্ট কি হবে সবাই জানে। পড়ে চলে যামুগা। ডিসিরা পাঠাইছে না। সব আছে। আমার কাছে আছেতো। এ সময় পাশে থাকা কর্মকর্তা ইসি সচিবের কানে কানে ফলাফল নিয়ে কিছু বলছিলেন। তখন ইসি সচিব বলেন- বিতর্কিত বানাইয়া ফালাইছে।’ মঙ্গলবার বিকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, ভোট বর্জন করে দেশের সর্বস্তরের মানুষ আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখিয়েছে।
৭ই জানুয়ারি গভীর রাত থেকে চুরি-ডাকাতি, জালভোট, শিশু কিশোর ভোট, রাস্তা থেকে পথিক ধরে নিয়ে ভোট, একই ব্যক্তির ৫০ ভোট, মিনিটে ৫০ ভোট, একই লাইন থেকে ঘুরেফিরে বার বার জাল ভোট দিয়েও বিকাল তিনটা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ % ভোটের ঘোষণা দিয়ে গণভবনের চাপে আবার এক ঘণ্টা পরেই ৪০% এবং গতকাল দুপুরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ৪১ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোটের গোজামিলের ভৌতিক হিসাব বানানোর এই ভুয়া হাস্যকর নির্বাচন ভোটের ইতিহাসে কলংক তিলক উৎকীর্ণ করলো ডামি সরকার। জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই অংশগ্রহণহীন ভোটার বিহীন একতরফা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি প্রদান করেছে। বিশ্বের সমস্ত মিডিয়া এবং পর্যবেক্ষকরা এই নির্বাচনকে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও ভোটার সম্পর্কহীন পুরোপুরি “ওয়ান উয়োম্যান শো’-এর ঘোষিত জয়-পরাজয়ের ভোট বলে আখ্যায়িত করেছে।
রিজভী বলেন, ভোটের দেখানো সংখ্যা নিয়ে বিশ্লেষণ করার বা আনন্দ-বেদনা প্রকাশের কিছু নেই। কাউকে দিবে কিঞ্চিৎ এবং কাউকে করবে বঞ্চিত – এই ধারার এক স্বেচ্ছাচারী একতরফা প্রহসনে শেখ হাসিনা কাউকে জিতিয়েছেন, কাউকে হারিয়েছেন। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, দুর্নীতিবাজ ‘ডামি সরকার’ দিয়ে দেশ চলতে পারে না। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রেখে শিগগিরই আরেকটি ‘রিয়েল নির্বাচনে’র জন্য প্রস্তুত থাকার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আজ আহ্বান জানিয়েছেন। তার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকামী মানুষের চলমান আন্দোলন এগিয়ে যাবে, জনগণের বিজয় হবেই হবে। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং বারো কোটি কোটি মানুষের লুণ্ঠিত ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরে রিজভী বলেন, সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ১০৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৪টি মামলায় ৩৮৬ জনকে আসামি করা হয়েছে।