শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন

জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের বিবৃতি: রাজনৈতিক কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০২৪

অবিলম্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, দেশটিতে আইনের শাসনের বিপজ্জনক অবক্ষয় ঘটেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, চতুর্থ মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়া বাংলাদেশ সরকারকে দমনমূলক প্রবণতা বন্ধ করতে এবং রাজনৈতিক সংলাপ ও অংশগ্রহণ পুনরায় চালুর জন্য মানবাধিকারের বড় ধরনের সংস্কার করতে হবে। গত বুধবার সংস্থাটির জেনেভা কার্যালয় থেকে পাঠানো বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘আমরা সুশীল সমাজ, মানবাধিকার রক্ষক, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর ব্যাপক হামলা, হয়রানি এবং ভীতি প্রদর্শনের খবরে উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনা সাম্প্রতিক নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচনের আগ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজার বিরোধী নেতা ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর এসেছে। অগ্নিসংযোগসহ নির্বাচন-সংক্রান্ত সহিংসতায় ৫৬ জন নিহত হয়েছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক বন্দিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের স্বাস্থ্যসেবার অধিকার অস্বীকার এবং আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অত্যধিক শক্তি প্রয়োগ করেছে। অজ্ঞাত গোষ্ঠী সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো স্বাধীন তদন্ত হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, দেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এবং আরও কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি আস্থার অভাব প্রকাশ করে ভোট বয়কট করেছে। ক্ষমতাসীন দলের সদস্যরা ভোটারদের ভোট দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছে। ভোটাররা তা করতে ব্যর্থ হলে সহিংসতা এবং তাদের সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা বাতিলের হুমকি দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিয়েছি। তাদের অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বিষয়ে পূর্ণ, দ্রুত এবং স্বাধীন তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছি। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের বিপজ্জনক অবক্ষয় ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হওয়ার কারণে আমরা শঙ্কিত। এটি দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করছে এবং এর সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বিপন্ন করতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা সরকারকে তার নতুন কর্মসূচিতে মানবাধিকার সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিতে এবং মৌলিক স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণের অবাধ ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধারের অনুরোধ করছি। এটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আশ্বস্ত করবে এবং বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে– সরকার তার আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অবিলম্বে এবং নিঃশর্তভাবে সব সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক কর্মীদের মুক্তি দিন, যাদের কোনো অভিযোগ ছাড়াই বা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ অভিযোগে আটক করা হয়েছে। ফৌজদারি অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মান অনুযায়ী ন্যায়সংগত প্রকাশ্য বিচার নিশ্চিত করুন। জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিচার ব্যবস্থার অখ-তা এবং স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য এর অতি প্রয়োজনীয় এবং উল্লেখযোগ্য সংস্কার করুন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সমিতি এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অবাধ ও বাধাহীন অনুশীলনের গ্যারান্টি দিন। প্রতিবাদ ও রাজনৈতিক সমাবেশের ওপর অযাচিত বিধিনিষেধ আরোপ করা থেকে বিরত থাকুন এবং এই মৌলিক স্বাধীনতাগুলোর গুরুতর লঙ্ঘনের জন্য কার্যকর জবাবদিহি নিশ্চিত করুন।
তারা বলেছেন, মিডিয়ার স্বাধীনতা, বৈচিত্র্য এবং বহুত্বকে সম্মান করুন; অনুসন্ধানী ও সমালোচনামূলক প্রতিবেদনের জন্য হুমকি, শারীরিক ও অনলাইন সহিংসতা বা বিচারিক হয়রানি এবং ফৌজদারি বিচার থেকে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে শক্তিশালী করার জন্য এবং অন্যান্য পদক্ষেপ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সমর্থন ও পরামর্শ দিতে প্রস্তুত।
উল্লেখ্য রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেক নিরীহ মানুষও। দৈনিক খবরপত্রসহ বিভিন্ন জাতীয় পত্রপত্রিকায় এনিয়ে একাধিক প্রতিবেন প্রকাশিত হয়েছে। যেমন; গতকাল বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘তিনিও হাইকোর্টে এসেছিলেন’ শিরোনামে লিখেছে,‘জন্ম থেকেই তিনি অন্ধ। কোরআনের হাফেজ। মসজিদে আজান দেয়ার কাজ করেন। ৫৫ বছর বয়সী আলমগীর হোসেন মিলন ককটেল বিস্ফোরণ মামলার আসামি। তিনিই নাকি পুলিশের ওপর ককটেল হামলা চালিয়েছেন। এমন এক মামলায় বুধবার হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে মামলার অন্য ৩৪ আসামিও জামিন নিয়েছেন। নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে তারা হাইকোর্টে এসেছিলেন জামিন নিতে। গত ২৮শে অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি’র সমাবেশ প- হওয়ার দিন রাতেই সেনবাগ সদরে ট্রাকে আগুন ও পুলিশের ওপর ককটেল হামলার অভিযোগে এই মামলা হয়। মামলার বিষয়ে মিলন বলেন, আমি চোখে দেখি না, ঠিকমতো চলাফেরাও করতে পারি না।
জন্ম থেকেই অন্ধ। অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতেও কষ্ট হয়। ছেলেমেয়ে হাত ধরে মসজিদে নিয়ে যায়, পাঁচ ওয়াক্ত আজান দেই। অথচ এক মাস আগে পুলিশ আইস্যা কয়, আমি নাকি নাশকতা মামলার আসামি। আমি গাড়ি পোড়াইছি, বাসে আগুন দিছি। পুলিশের ওপর ককটেল মারছি। আমার নামে ওয়ারেন্ট আছে। এই কথা শুনে আমার মাথার ওপর আকাশ ভাইঙ্গা পড়ছে।
সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের বায়তুল আমান জামে মসজিদের খাদেম মিলন বলেন, আমি জীবনে কখনো রাজনীতি করিনি। অন্ধ মানুষ রাজনীতি করে কীভাবে? যে চলাফেরাই করতে পারে না, সে আবার রাজনীতি করে কেমনে? মিছিলে যায় কীভাবে? আমি কোথায়, কখন, কার গাড়ি পোড়াইছি তাও জানি না। আমাকে মিথ্যা মামলায় ঢুকানো হয়েছে। আমি এখন কার কাছে বিচার দেবো? ৫ সন্তানের সংসার মসজিদে খাদেমের চাকরি করে চালাই। এখন এই মামলা কীভাবে চালাবো? জীবনে কখনো আদালতেই যাইনি। এখন হাইকোর্ট পর্যন্ত যেতে হলো।
মামলার এজহারে দেখা যায়, ২৮শে অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপি’র মহাসমাবেশের পরের দিন ২৯শে অক্টোবর নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার বাসে আগুন ও পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের দায়ে একটি মামলা করে পুলিশ। মামলা নং ৭(১০)২৩। এজহারে বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সেনবাগ উপজেলা বিএনপি নেতা কাজী মফিজুর রহমানকে এক নম্বর আসামি করে উপজেলা বিএনপি’র বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ মোট ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় ২৬নং আসামি করা হয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী আলমগীর হোসেন মিলনকে। তবে এজহারে মিলনের জায়গায় নিলয় উল্লেখ করা হয়। তবে পিতার নাম একই রাখা হয়। বুধবার মিলনসহ ৩৫ জন জামিন নিতে হাইকোর্টে আসেন। মামলার এজহার পর্যালোচনা করে আসামিদের ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসাইনের হাইকোর্টে বে এ জামিন আদেশ দেন। এই মামলার আইনজীবী এডভোকেট বাকী মর্তুজা বলেন, মামলায় ঘটনাস্থল সেনবাগ থানার সেবারহাট এলাকার একটি স্কুলের সামনে দেখানো হয়েছে। তবে মামলার বাদী যাকে করা হয়েছে, তিনি শুধু সাদা কাগজে সই করেছেন। পরে কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। আর ভোর সাড়ে ৬টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে এজহারে বলা হয়েছে। এই সময়ে আসামিরা কেউ ঘুম থেকেই উঠেনি। তাহলে কীভাবে তারা আগুন দিলো? আমরা আদালতে বিষয়টি তুলে ধরেছি। আদালত সন্তুষ্ট হয়ে ৬ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন।
মামলার বাদী বাস ড্রাইভার ওমর ফারুক বলেন, এই মামলা ভিত্তিহীন। কাদের আসামি করা হয়েছে তা আমি জানি না। আমার গাড়িটি ট্রাক ছিল। নাম এম.আর.বি। আমরা ইটের খেপ টানি। ওইদিন সেনবাগ সেবারহাট এলাকায় কয়েকজন মানুষ এসে গাড়িতে আগুন দিয়ে দৌড়ে চলে যায়। তখন সবার মাথায় হেলমেট ছিল। আমি কাউকে দেখতে পারিনি। কিন্তু সেনবাগ থানা থেকে পুলিশ এসে আমাদের মামলা করতে চাপ দেন। আমি তখন বলেছি কে আগুন দিয়েছে আমি কাউকে দেখতে পাইনি কাদের আসামি দিবো? তখন পুলিশ বলেছে আপনি শুধু সাদা কাগজে সই করেন আসামি আমরা খুঁজে বের করবো। পরে আমি সই করে চলে আসছি। এরপরে কী হয়েছে আমি কিছু জানি না।
মামলার এক নম্বর আসামি বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মফিজুর রহমান বলেন, এই মামলা একটি মিথ্যা মামলা। মামলার বাদীও বলেছে পুলিশ জোর করে সাদা কাগজে সই করে মামলা সাজিয়েছেন। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে এই মামলা দেয়া হয়েছে। তারা এতই বেকুব যে একজন অন্ধ মানুষকেও মামলায় জড়িয়ে দিয়েছে। এতে বোঝা যায় মামলাটি সাজানো ও ষড়যন্ত্রমূলক।
একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকীয় নিবন্ধেও বিরোধীদলের আটক নেতা কর্মীদের নিশর্ত মুক্তি দাবি করা হয়েছে।
‘রাজনৈতিক মামলা:আটক নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেওয়া হোক’ শিরোনামে প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে,‘৭ জানুয়ারির আগের ও পরের রাজনৈতিক দৃশ্যপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। সে সময়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জনের কর্মসূচি নিয়েছিল। তাদের সেই কর্মসূচিতে যাতে নির্বাচন বানচাল না হয়ে যায়, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে নির্বিচার আটক করা। এ ক্ষেত্রে সরকারের হাতে প্রধান বর্ম ছিল ‘নাশকতা’ ও নির্বাচনবিরোধী তৎপরতা। এসব মামলার আইনি ভিত খুব জোরালো নয়। অনেক ক্ষেত্রে নেতা-কর্মীদের আটক করার পর মামলা দেওয়া হয়েছে কিংবা পুরোনো মামলায় তাঁদের যুক্ত করা হয়েছে। আবার কোথাও ঘটনা ঘটতে পারে, এই ধারণা থেকেও তাঁদের আটক করা হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছিল।
২২ জানুয়ারি প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের তিন মাসে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানায় বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২৩৪টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয় সাড়ে পাঁচ হাজার নেতা-কর্মীকে। বেশির ভাগ মামলার বাদীও পুলিশ। বিএনপির দলীয় সূত্র বলছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে চলতি জানুয়ারি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত সারা দেশে তাদের ২৭ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনায় ঢাকার বিভিন্ন থানায় মামলা হয় ৩৬টি। এসব মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ দলটির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর যে সন্ত্রাসী কর্মকা- ঘটেছে, তা অগ্রহণযোগ্য। সেই ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা জরুরি। কিন্তু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহাসচিবসহ বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে আটক রাখার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। প্রকৃত অপরাধীদের ধরে বিচারে সোপর্দ করা আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আটক করা এক কথা নয়। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। তাঁর এই বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তবতার মিল কতখানি? বিএনপি নেতাদের দাবি, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের রাজনীতির মাঠ থেকে বিতাড়িত করতে সরকার একের পর এক মামলা ও গ্রেপ্তার করেছে। যাঁরা এখন রাজনৈতিক মামলার পক্ষে আইনের দোহাই দিচ্ছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অভিযোগকে স্বতঃসিদ্ধ বলে দাবি করছেন, তাঁরাও বিরোধী দলে থাকতে একইভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন। একটি দলের মহাসচিব হুকুম দিয়ে সমাবেশ প- করতে পুলিশের ওপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেবেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সরকারের অভিযোগ, বিএনপির নেতৃত্ব নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নির্বাচন তো হয়ে গেছে। নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। নতুন সংসদের অধিবেশনও বসতে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে যেসব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ নেই, তাঁদের কেন আটক রাখা হবে? সরকারের নীতিনির্ধারকদের মুখ থেকেও নতুন সরকারের সামনে রাজনৈতিক, বৈশ্বিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কথা শোনা গেছে। পশ্চিমের যেসব দেশ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তারাও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিয়ে সরকার অন্তত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার পরিবেশ তৈরি করতে পারে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com