রংপুর অঞ্চলে হাড়কাঁপানো শীতের তীব্রতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশা অব্যাহত রয়েছে। ফলে অচল হয়ে পড়েছে জনজীবন। রাত থেকে কুয়াশা শুরু হলেও অব্যাহত রয়েছে বেলা ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত। একইভাবে রংপুর জেলায় ভোরের দিকে তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও সকাল ৯টায় তা ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় রংপুর বিভাগে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ শীত মৌসুমে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে, রংপুর জেলায় ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি, নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৯ ডিগ্রি, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি, দিনাজপুরে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি, নীলফামারীর ডিমলায় ৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি, গাইবান্ধায় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি, লালমনিরহাটে ৭ দশমিক ১ ডিগ্রি, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের প্রধান সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, রংপুর বিভাগে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। নেমে যেতে পারে ২ ডিগ্রিতে। সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশাও অব্যাহত থাকতে পারে।
রংপুর বিভাগে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন সহায়-সম্বলহীন ছিন্নমূল মানুষ। শীতবস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে না ঘুমিয়ে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। অপরদিকে, খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বিশেষ করে শিশুদের বের না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শরীফুল ইসলাম। একইভাবে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নাগরিকদের বাসা থেকে বের না হতে জন্য রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে বলা হয়েছে।
এদিকে, শৈত্যপ্রবাহের কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষজন। হাড়কাঁপানো শীতে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না অনেকে।
অপরদিকে রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অব্যাহত ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা, আলুক্ষেতে লেট ব্লাইট রোগ ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। রংপুর অঞ্চলে টানা ১১ দিন সূর্যের মুখ দেখা না দেওয়ার পর আবারও ৩ দিন ধরে সূর্য দেখা যাচ্ছে না। ২/১ বার উঁকি দিলেও মেঘে ঢেকে যাচ্ছে সূর্য। অন্যদিকে, তীব্র শীতের কারণে কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানান রোগবালাই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগ শিশু ও বয়োবৃদ্ধ।