যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন। এই চিঠির পর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আর কোনো অস্বস্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রাসেলস সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন। এ সময় বাইডেনের চিঠিকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় আসীন হচ্ছে।
মিয়ানমার থেকে দেশটির বিজিবি সদস্যরা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। এ বিষয়ে সরকারের মনোভাব কি-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সরকার আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছে। এতে নতুন কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না। সীমান্তে আমাদের বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিকভাবে আলোচনা চলছে। সীমান্ত সুরক্ষিত আছে ফলে তৃতীয়পক্ষ ডাকার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এখন পর্যন্ত রেজিস্টার্ড ৯৫ সদস্য এসেছে।
এছাড়া নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের সাথে কোনো অস্বস্তি নেই বলেও জানান তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক, জলবায়ু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ একসাথে কাজ করবে। ব্রাসেলস সফর নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ইন্দো-প্যাসিফিক রিজিয়নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার হওয়ার আলোচনা হয়েছে ব্রাসেলসে। এর আগে সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত আব্দুলমুতালিব এস সুলাইমান এবং থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর। প্রসঙ্গত, গতকাল রোববার মার্কিন দূতাবাস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চিঠি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়।
চিঠিতে বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উচ্চাভিলাসী অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলোতে সমর্থন করে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আমাদের অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের পরবর্তী অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, মানবিক সহায়তা বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য এবং আরও অনেক বিষয়ে তাদের কাজ অব্যাহত রাখার আন্তরিক আকাঙ্ক্ষার কথা জানাতে চান তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, সমস্যা সমাধানে আমাদের একসঙ্গে কাজ করার দীর্ঘ ও সফল ইতিহাস রয়েছে এবং আমাদের জনগণের সঙ্গে জনগণের শক্তিশালী বন্ধনই এই সম্পর্কের ভিত্তি। তিনি একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশের অংশীদার হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।