সরকার দেশকে ঋণের ফাঁদে ডুবিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, দেশের সমগ্র অর্থনীতিকে ভয়াবহ এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে আওয়ামী ডামি সরকার। গণতন্ত্রহীনতা, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, বিদেশে অর্থপাচার, মূল্যস্ফীতি, নিম্নমুখী বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, চলতি হিসাবের ঘাটতি, রাজস্ব ঘাটতি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার নজিরবিহীন দরপতনে জনগণ আতংকিত। বর্তমানে দেশের অর্থনীতির প্রতিটি প্রধান সূচকের অবস্থান এতটাই শোচনীয়, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে এক মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশকে ঋণের ফাঁদে ডুবিয়ে দিয়েছে সরকার। অভ্যন্তরীণ ঋণ শোধ করতে ট্যাক্স-ভ্যাট-কর খাজনার পরিধি আওতা বাড়িয়ে জনগণের গলায় গামছা দিয়ে শ্বাসরোধ করার অবস্থায় নেয়া হয়েছে।
রিজভী বলেন, বর্তমানে দেশী-বিদেশী ঋণের পরিমাণ বাংলাদেশের দুইটি অর্থ বছরের বাজেটেরও বেশি। যে শিশু ভূমিষ্ট হচ্ছে আজ তার মাথায়ও প্রায় লাখ টাকার বেশী ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে শেখ হাসিনা। ঋণের টাকায় কানাডার বেগম পাড়া, আমেরিকায় বিলাস বহুল বাডড়িগাড়ী-ব্যবসা, দুবাই সিঙ্গাপুরে বিনিয়োগ, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমসহ তিন মহাদেশে সম্পদের পাহাড় গড়া হয়েছে। সুইস ব্যাংকে ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ কার কার নতুন একাউন্টে টাকা জমা হচ্ছে সেটিও অনবগত নয় অনেকের কাছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবদ সম্মলেনে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে বাংলাদেশের সীমান্ত অরক্ষিত। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনকে আমেরিকা স্বাগত জানায়নি বা স্বীকৃতি দেয়নি। তারা বারবার পরিষ্কার করে বলছেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। তারা সরকার টু সরকার বা জনগণের সাথে কাজ করতে চায়। রাশিয়া বা চীনের সাথেও আমেরিকা কাজ করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ডামি সরকার’ নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার ভাগ, বাটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও দেশের অধিকাংশ মানুষের দিন কাটছে অর্ধাহারে অনাহারে। দেশে এই মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য দুটোই ‘ডামি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। অপরদিকে ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ এর মতো জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বিপর্যস্ত দেশের কৃষি ও শিল্পখাত। বোরো আবাদের এই ভরা মওসুমে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কৃষকরা চরম হতাশার মধ্যে পড়েছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর বিদ্যুৎ দেয়ার কথা বলে কুইক রেন্টালের নামে রাষ্ট্রের এক লাখ কোটি টাকার বেশি লোপাট করলেও এখন দেখা যায়, সবই ফাঁকি। সবই ছিল লুটপাট আর টাকা পাচারের ফন্দি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুছ, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, তারিকুল আলম তেনজিং, শাহ নেছারুল হক, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।