শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের আকাশপথে ফেরত পাঠাতে চায় বাংলাদেশ: সেহেলি সাবরিন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের আকাশপথে নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি শাখার মহাপরিচালক সেহেলি সাবরিন এ কথা জানান। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বলছে, মিয়ানমার থেকে নতুন করে একজনকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এরপরও এখনো বিজিপি ও সেনাসহ দেশটির বেসামরিক লোকরা কেন বাংলাদেশে ঢুকছে? মিয়ানমার নিজ দেশের বিজিপি ও সেনাসদস্যদের নৌরুটে ফেরত নিতে চাইলেও বাংলাদেশ কেন উড়োজাহাজে পাঠাতে চাচ্ছে?
এসব প্রশ্নে সেহেলি সাবরিন বলেন, মিয়ানমার সরকারের নিয়মিত বাহিনী বিজিপি সদস্যদের আশ্রয়দান এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকে এক করে দেখা ঠিক হবে না। আশ্রিত বিজিপি সদস্যদের নিরাপদে দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রধান বিবেচ্য বিষয়। আকাশপথ বা নৌরুটের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ নয়, কিংবা পূর্বশর্তও নয়। তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই বাংলাদেশ আকাশপথে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগে ভারত থেকে আকাশপথেই সেনা ফিরিয়ে নিয়েছিল মিয়ানমার। সে কারণেই বাংলাদেশ তাদের ফ্লাইটে ফেরত নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে তাদের প্রত্যাবাসন চায়। এখানে সময় ক্ষেপণের সুযোগ নেই। আশা করা যায়, তাদের দ্রুতই ফেরত পাঠানো হবে, আর সেটা নৌ কিংবা আকাশ যে কোনো রুটে। তবে সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে আশ্রিতদের নিরাপদে ফেরত পাঠানো।
সেহেলি সাবরিন আরও বলেন, মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীদের আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কারণ থাকার প্রশ্ন অবান্তর। সম্প্রতি ভারতেও মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যরা আশ্রয় নিয়েছিল। ভারত থেকে তারা নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র বলেন, একটি নিয়মিত বাহিনীর বিপদগ্রস্ত সদস্য হিসেবে তারা বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় নিয়েছেন। প্রথমদিন থেকেই মিয়ানমার সরকার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে।
পালিয়ে আসা বিজিপি ও সেনাদের ফিরিয়ে নিতে রাজধানী নিপিদোর সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্ক জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিয়ানমারের সরকার তাদের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে এরইমধ্যে আগ্রহ ব্যক্ত করেছে। তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সেদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুতই তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হবে।
মিয়ানমারের চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ যে কঠিন ভূরাজনৈতিক সমীকরণে পড়েছে, তা থেকে উত্তরণে কী ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা রয়েছে- এমন প্রশ্নে সেহেলি সাবরিন বলেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত। তবে এতে বাংলাদেশের জনগণ, সম্পদ কিংবা সার্বভৌমত্ব যেন কোনোভাবে হুমকিতে না পড়ে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সুবিধাজনক সময়ে স্বেচ্ছায় টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক, আ লিক ও বহুপাক্ষিক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সতর্ক। এছাড়া জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে নিউইয়র্কের স্থায়ী মিশন সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি শাখার এই মহাপরিচালক বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মিয়ানমারের শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা দেখতে চায় বাংলাদেশ। মিয়ানমারের সংকট উত্তরণে আ লিক ও বৈশ্বিক যে কোনো উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অনিবার্যভাবে থাকা প্রয়োজন বলে মনে করে বাংলাদেশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com