অমর একুশে বইমেলা চলাকালে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ছোটদের জন্য শিশুপ্রহরের আয়োজন করে বাংলা একাডেমি। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলে এই বিশেষ আয়োজন।এ সময় শিশুদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে সিসিমপুরের ‘লাইভ শো’। এছাড়াও, অমর একুশে উদ্যাপনের অংশ হিসেবে শিশু কিশোরদের চিত্রাঙ্কনসহ অন্যান্য প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার দুপুরে দেখা যায়, শিশু চত্বর জুড়ে ছিল শিশুদের আনাগোনা। দেখা মনে হচ্ছিল, বইমেলা শিশুদের দখলে। বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের হাত ধরে মেলায় এসেছে বিভিন্ন বয়সের শিশু-কিশোররা। শিশু চত্বরের মঞ্চে লাফালাফি করছেন অসংখ্য শিশু।তাদের মধ্যে একজন সামারা নেসা। যাত্রাবাড়ীর লিটল ডায়মন্ডস ইংলিশ স্কুলের কিন্ডারগার্টেন প্রথম শ্রেণির এই ক্ষুদে শিক্ষার্থী বলেন, ‘বাবার সঙ্গে বইমেলা দেখতে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে। হালুমকে বেশি ভালো লেগেছে।’
রাদিয়া বিনতে রাশেদ বনশ্রীর নভেলটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের জুনিয়রের শিক্ষার্থী। সেও এসেছে বাবার হাত ধরে। রাদিয়া বলেন, তিনি বেই মেলায় এসেছেন শুধু মাত্র সিসিমপুরের বই কিনতে।রামপুরার স্টার হাতেখড়ি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নার্সারির শিক্ষার্থী মাইরাজ বিল্লাহ ঢাকা টাইমকে বলেন, ‘হালুমকে দেখে তার অনেক ভালো লেগেছে। বাবা-মায়ের সঙ্গে এসে একটা ছড়া ও একটা গল্পের বই কিনেছে সে।’
গতকাল শুক্রবারের বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশু চত্বর সংলগ্ন শিশুতোষ বইয়ের স্টলগুলোতেও ভিড় বাড়তে থাকে। অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়ে স্টলগুলো ঘুরে দেখেন শিশুরা। পছন্দমতো কেনেন হরেক রকমের বই।সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাদিদ বিন আলম বলেন, ‘আমি কিনেছি রেজা স্যারের গোয়েন্দা স্কুল বইটি। বাবা-মা ও ভাই-বোনের সাথে এসেছি। গোয়েন্দা গল্প পড়তে ভাল লাগে। সিসিমপুর দেখেছি। হালুমকে বেশি ভাল লেগেছে’।
শিশুপ্রহরের অন্যতম আয়োজন চিত্রাঙ্গনে অংশ নিয়েছেন আজিমপুর কলোনির লিটল অ্যাঞ্জেল স্কুলের শিশুশ্রেণির শিক্ষার্থী শুচিস্মিতা বিশ্বাস। কথা তার সঙ্গেও। ক্ষুদে এই শিক্ষার্থী বলেন, তার ভূতের বই বেশি পছন্দ। স্টল সংশ্লিষ্টরা জানালেন, বইয়ের বিক্রিও ভালো।বই পড়ি প্রকাশনীর প্রকাশক আপন সরকার বলেন, ‘অ্যালফাবেট, স্বরবর্ণ- ব্যাঞ্জনবর্ণ ও আরবি শিক্ষার বই ভালো চলছে।’
ঘাসফড়িংয়ের বিক্রয়কর্মী জবাইনাহার জুঁই জানান, ‘আনিসুল হক ও আহসান হাবিবের বই সবচেয়ে বেশি চলছে। এর মধ্যে আনিসুল হকের গুড্ডুবাবুর গল্প, আহসান হাবিবের ছোটদের স্কুলের গল্প ও নীল ডাউনে ফার্স্ট বয় বইগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে।’
‘পপআপ’ বইয়ের বিক্রি ভালো বলে জানালেন প্রগতি পাবলিশার্সের প্রকাশক আশরার মাসুদ। বাবুইয়ের প্রকাশক কাদের বাবুর ভাষ্য, বাচ্চারা রহস্য গল্প, গোয়েন্দা গল্প, রুপকথা, এগুলো বেশি পছন্দ করছে। পেশায় চাকরিজীবী এক অভিভাবক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় যুগে বাচ্চারা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। সেজন্য তাদেরকে মুক্ত পরিবেশের সংস্পর্শে আনা এবং বইপড়ায় আগ্রহী করার জন্য বইমেলায় আনা’।- ঢাকা টাইমস