ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান খানের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। ১১ বছর যাবত একই কর্মস্থলে থেকে শিক্ষকদের হয়রানী করতে নানা অজুহাতে অর্থ আদায়, অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ২টি ক্লাস্টারের দায়িত্ব গ্রহণ, শিক্ষকদের সাথে দুর্ব্যবহার, কর্মস্থলে না থাকা, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত না হওয়া, নিয়মিত অফিসে না আসাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন তিনি। এই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অসদুপায় অবলম্বন করে দীর্ঘদিন যাবত বীর দাপটে এসব কাজ করে আসছে। এক কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি থাকার নিয়ম না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে ১১ বছর যাবত একই কর্মস্থলে রয়েছেন তিনি। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বোয়ালমারীতে যোগদানের পর থেকেই বিধি মোতাবেক কর্মস্থলে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি থাকেন ২৫ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলায়। সেখান থেকেই প্রতিদিন যাওয়া আসা করে থাকেন তিনি। স্কুল ভিজিটের নামে প্রতিদিনই দেরি করে অফিসে আসেন এই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দূর্নীতি দমন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেন বোয়ালমারীর বেশ কয়েকজন শিক্ষক। এছাড়া আজিজুর রহমান খান তার সহধর্মিণী জেসমিন খানমকে ভূয়া শিক্ষা সনদে জেলার নগরকান্দা উপজেলা সদরে অবস্থিত এম এন একাডেমিতে সহকারী শিক্ষক (সমাজ, ইনডেক্স ১০৫৭৬১৮) হিসেবে চাকরি নিয়ে দেন। সম্প্রতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারিকরণ হলে শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব মো. সেলিম সিকদার স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায় ভূয়া সনদের কারনে চাকুরী থেকে বরখাস্ত হন জেসমিন খানম। তার এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষকরা প্রতিবাদ করলেই বিভিন্নভাবে শিক্ষকদের হয়রানি, নানা অজুহাতে উৎকোচ গ্রহণ এখন তার নিত্যনৈমিত্তিক রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ। দুর্নীতিবাজ এই সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার দুর্নীতির হাত থেকে পরিত্রাণ চায় উপজেলার সাধারণ শিক্ষকগন। এ ব্যাপারে রাখালতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বাসার জানান, একটি জাতীয় দিবসে ছুটির দিনে আমার এক নিকটাত্মিয়ের মৃত্যুজনিত কারনে আমি প্রধান শিক্ষকের নিকট ২ ঘন্টার ছুটি নিয়ে সেখানে যাই, এ সময় তিনি ভিজিটে এসে আমাকে শোকজ করেন। হাটখোলারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বোয়ালমারী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুজ্জামান মিলন জানান, তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। দূর্নীতিবাজ এ সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা শিক্ষকদের হয়রানি করতে নানা পন্থা অবলম্বন করেন। পান থেকে চুন খসলেই তাদের শোকজ করে অবৈধভাবে টাকা পয়সা নিয়ে থাকেন। সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি করছি। উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুর রহমান খান বলেন- আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, মিথ্যা। শিক্ষকদের অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি পদক্ষেপ গ্রহণ ও অনৈতিক সুবিধা না দেওয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।