নির্বাচন পূর্ববর্তী ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ যে একেবারে অন্ধকারে নয় রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেপ্তারির প্রতিবাদে বিরোধীদের সভায় আরও একবার স্পষ্ট করে দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন, সাগরিকা ঘোষরা সাফ জানিয়ে দিলেন, ইন্ডিয়া জোটে তৃণমূল ছিল, আছে, থাকবে। এদিকে আজই কৃষ্ণনগরে ভোটের প্রচারে গিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়া মৈত্রর সমর্থনে প্রচারে গিয়ে মমতাও স্পষ্ট করে দিলেন, “অল ইন্ডিয়ায় ইন্ডিয়ার জোট আমি তৈরি করেছি। নামও আমার দেওয়া। ভোটের পর আমি দেখে নেব।” অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে রবিবার পথে নামেন বিরোধীরা। উদ্দেশ্য রাজধানীর রাস্তায় ‘মেগা র্যালি’। মিছিলে উপস্থিত কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গ,ে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, সমাজবাদী পার্টির সর্বময় নেতা অখিলেশ যাদব, বিহারের তেজস্বী যাদব প্রমুখ। বিজেপির ক্ষমতা নেই ১৮০ আসন পাওয়ার। কারসাজি করে ৪০০ আসন পার করতে চাইছে! রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে গেরুয়া শিবিরকে এভাবেই আক্রমণ শানালেন রাহুল গান্ধী। রামলীলা ময়দানের লোকতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচি থেকে রাহুল বলেন, ইভিএম কারসাজি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর, সংবাদমাধ্যমকে চাপে রাখা ছাড়া মোদি-শাহরা ১৮০ আসনের বেশি জেতার ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু ম্যাচ ফিক্সিং করা আছে। মোদি আম্পায়ার ঠিক করে রেখেছেন। তাই এত সহজে ৪০০ আসন পার করার স্লোগান দিতে পারছে বিজেপি। এর পাশাপাশি মঞ্চ থেকে ইলেকটোরাল বন্ড কা-ে সিট তদন্তের দাবি জানান কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধি।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে স্বামী গ্রেপ্তার হবার পর ইন্ডিয়া জোটের মেগা র?্যালিতে যোগ দিলেন সুনীতা কেজরিওয়াল। বললেন, ‘আপনারা কি বিশ্বাস করেন না যে কেজরিওয়াল একজন সত্যিকারের দেশভক্ত ও সৎ ব্যক্তি? এই বিজেপির লোকেরা বলছে কেজরিওয়াল জেলে রয়েছেন, ওকে ইস্তফা দিতে হবে। ওর কি ইস্তফা দেওয়া উচিত? আপনাদের কেজরিওয়াল এক সিংহ, ওকে ওরা চিরকাল জেলে ভরে রাখতে পারবে না।” এর পাশাপাশি কেজরিওয়ালের ছয় গ্যারান্টির কথা এদিন পড়ে শোনান নেত্রী। তিনি যে ছটি প্রতিশ্রুতির কথা বলেছেন তার মধ্যে রয়েছে -দেশ জুড়ে ২৪ ঘণ্টার বিদ্যুৎ সরবরাহ, সারা দেশের দরিদ্রদের বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, প্রতিটি গ্রামে চমৎকার সরকারি স্কুল, প্রতিটি গ্রাম ও মহল্লায় মহল্লা ক্লিনিক, প্রতি জেলায় মাল্টি স্পেশালিটি যুক্ত সরকারি হাসপাতাল, দেশের প্রত্যেক মানুষের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, কৃষকদের শস্যের যথাযথ মূল্যদান এবং দিল্লিকে রাজ্যের স্বীকৃতি। গ্রেফতার হওয়া আরেক মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের স্ত্রী কল্পনা সোরেনও উপস্থিত ছিলেন এই সভায়। গত লোকসভা ভোটে বিজেপির স্লোগান ছিল ‘অব কি বার, ফির মোদি সরকার’। এই লোকসভা ভোটেও দলের তরফে নতুন স্লোগান তোলা হয়েছে, ‘তিসরি বার মোদি সরকার, আব কী বার ৪০০ পার। বিজেপির এই আত্মবিশ্বাসী মনোভাবকেই ধাক্কা দিতে তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে এক মঞ্চে হাজির হলেন বিরোধীরা। এখন দেখার বিরোধীদের এই কর্মসূচি বিজেপির পালের হাওয়া কাড়তে পারে কিনা।