শিল্পীর রং-তুলির আঁচড়ে নয়, ফসলের খেতে সবুজ-বেগুনি ধানের চারা লাগিয়ে জাতীয় পতাকার আদলে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাতীয় পতাকার রূপ,আর এই কাজটি করেছেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের কৃষক রঞ্জিত সাহা। তিনি নিজের ফসলের মাঠে সবুজ ও বেগুনি ধানের চারা দিয়ে তৈরি করেছেন জাতীয় পতাকার প্রতিকৃতি উপজেলার শহর থেকে কদমতলী বাজার পার হলেই দেবীপুর গ্রামের সড়কঘেঁষা ৬০ শতাংশ ধানের জমিতে চমৎকারভাবে বেগুনি ধান আর সবুজ ধানের মিশ্রণে জাতীয় পতাকার এক অনন্য শস্যচিত্রের কর্ম চোখে পড়ে। এর আগেও তিনি ধানক্ষেতে জাতীয় পতাকার আকৃতিতে দুই জাতের ধান রোপণ করে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি করেছেন এলাকাজুড়ে। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই বেগুনি ধানের চাষ দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোকজন এখানে আসছেন। দেখছেন ধান ক্ষেত, তুলছেন ছবি, কেউবা আবার বীজ নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সৌন্দর্য ও পুষ্টিগুণে ভরপুর বেগুনি রঙের ধানের আবাদ কয়েক বছর যাবত শুরু হয়েছে। এ ধানের নাম ‘পার্পল লিফ রাইস’। এই ধানগাছের পাতা ও বেগুনি। এর চালের রং বেগুনি। তাই কৃষকদের কাছে এখন পর্যন্ত এ ধানের পরিচিতি বেগুনি রঙের ধান বা রঙিন ধান হিসেবে। দিন দিন কৃষকদের কাছে এই ধানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিগন্ত মাঠজুড়ে সবুজ আর সবুজ। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায় সবুজের মাঠে মাঝ খানে বেগুনি রঙ। সবুজ ধানের বেষ্টুনির কাছে গেলে মনে হয় বেগুনি রঙের জায়গাটুকু কোনো আগাছা বা বালাই আক্রান্ত ধান। কিন্তু না, এটি এমন একটি ধানের জাত, যার পাতা ও কান্ডের রং বেগুনি। এমন ভাবে তৈরি করেছেন যা দেখতে অনেকটাই জাতীয় পতাকার মতো। ধানক্ষেতে জাতীয় পতাকার আকৃতির এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ কলেজছাত্র রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ধানক্ষেতের চারপাশে সবুজ রঙের ধান আর মাঝখানে বেগুনি রঙের ধান রোপন করায় দেশের জাতীয় পতাকার আদলে হয়েছে। যা দেখতে খুবই সুন্দর দেখাচ্ছে। তাই জমির কাছে গিয়ে একটি সেলফি তুলেছেন বলে জানান। পথচারী রুবেল মিয়া বলেন, আমাদের জাতীয় পতাকার মতো দেখতে ধান ক্ষেতটি। যদিও জাতীয় পতাকার মতো কালার হয়নি। তারপরও অনেকটাই জাতীয় পতাকার মতো দেখতে খুবই ভালো লাগছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ধান ক্ষেতের মধ্যে বেগুনি ধান দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আদলে ক্ষেত যা সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। পাশাপাশি এই বেগুনি ধান পুষ্টিগুণ বেশি। তাই দিন দিন বেগুনি ধান চাষাবাদ হচ্ছে। যেসব চাষি বেগুনি ধানের আবাদ করেছেন তাদের সঙ্গে কৃষি বিভাগ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।