দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গত ১০ বছর ধরে যাদের শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫০ এর নিচে এমন প্রায় ৩০০ বিদ্যালয় চিহ্নিত করা হয়েছে। এই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এগুলোকে পাশের সরকারি স্কুলের সাথে একীভূত করা হবে। সম্প্রতি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেছেন, গত ১০ বছর ধরে যেসব স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ এর নিচে, সেসব স্কুলকে আমরা পাশের সরকারি স্কুলের সাথে একীভূত বা এক শিফটের করে দেব। স্কুলের সাথে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একীভূত করা হবে। তিনি বলেন, দেশের ৫৬ জেলায় প্রথম থেকে প ম শ্রেণি পর্যন্ত ৫০ জন শিক্ষার্থীও নেই এমন ৯৪৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব স্কুলের মধ্যে প্রায় ৩০০ স্কুলের গত ১০ বছরের শিক্ষার্থীর ধারাবাহিতা যাচাই-বাছাই করে দেখা গেছে, প্রতি বছর সেখানে ৫০ এর কম শিক্ষার্থী ছিল। এ রকম বেহাল স্কুলগুলোকে পাশের স্কুলের সঙ্গে একত্রিত বা একীভূত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বরিশাল শহরের একটি স্কুলের উদাহরণ দিয়ে সচিব বলেন, সেই স্কুলে গত দশ বছরে ৫-৭ জন শিক্ষার্থী ছিল। এসব স্কুল একীভূত করা হবে। অন্যদিকে, দেশের ৫০০ এর বেশি স্কুলে ১৫০০ বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। সেখানে ভর্তির জন্য আরও ৫০০-৭০০ শিক্ষার্থী অপেক্ষায় রয়েছে। এসব স্কুলের অবকাঠামো উন্নয়নসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে।প্রাথমিকের সচিব বলেন, পার্বত্য অ লের অনেক স্কুল আছে যেখানে গড়ে ৩ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যেটা যুগের পর যুগ এভাবে চলছে। এসব স্কুলের ক্ষেত্রে একীভূত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিক্ষক মজিবুর রহমান বললেন, আগামী ২০ বছর যেখানে শিক্ষার্থী বাড়বে না, এ ধরনের কোনো ডেটা থাকলে স্কুল বন্ধ হতে পারে। তবে স্কুলের ভৌত কাঠামোকে কাজে লাগিয়ে কমিউনিটি সেন্টার করা যেত। যেখানে নিরক্ষর আছে, সেখানে স্বাক্ষর করার বিষয় আছে। লাইফ লং লার্নিংয়ের অংশ হিসেবে ওই স্কুলগুলোতে ব্যবহার করা যেত। একবার বন্ধ করে দিলে আবার চালু করা অনিশ্চিত হয়ে যায়। তাই একেবারে বন্ধ না করে অন্য কিভাবে কাজে লাগাতে পারি, তা করা গেলে ভালো ফল আসবে।