ঢাকাই চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা সুনেত্রা মারা গেছেন। ২৩ এপ্রিল কলকাতায় তার মৃত্যু হয়। এক ফেসবুক পোস্টে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন শিল্পী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক জায়েদ খান। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা, শৈশবে আমার পছন্দের একজন নায়িকা, চোখের প্রেমে পড়তো যে কেউ, তিনি সুনেত্রা। অনেকদিন বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতায়। আমি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন বেশ কয়েকবার ফোনে কথা বলেছিলাম। আজ হঠাৎ শুনলাম তিনি আর নেই, মৃত্যুবরণ করেছেন। নীরবে নিভৃতে চলে গেলেন। এভাবেই হারিয়ে যায় মানুষ, চলে যায়।
ঢাকাই ছবির ইতিহাসে সুনেত্রার নাম থেকে যাবে সুপারহিট বহু ছবির নায়িকা হিসেবে। ১৯৯০ সালে মুক্তি পাওয়া দেলোয়ার ঝাহান ঝন্টু পরিচালিত ‘পালকী’ ছবিটি তাকে দিয়েছিল অন্যরকম জনপ্রিয়তা।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রতিষ্ঠা পেলেও সুনেত্রা ছিলেন কলকাতার মেয়ে।
সেখানেই মঞ্চে অভিনয় করতেন। তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নিয়ে আসেন গুণী নির্মাতা মমতাজ মালী। ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘উসিলা’ ছবি দিয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিষিক্ত হন তিনি।
শুরুতেই নায়ক হিসেবে পান তৎকালীন সুপারস্টার অকাল প্রয়াত নায়ক জাফর ইকবালকে। এরপর তিনি অভিনয় করেছেন ‘বোনের মতো বোন’, ‘ভাবীর সংসার’, ‘সাধনা’, ‘রাজা মিস্ত্রি’, ‘যোগাযোগ’, ‘সুখের স্বপ্ন’, ‘আলাল দুলাল’, ‘শুকতারা’, ‘সহধর্মিনী’, ‘কুচবরণ কন্যা’, ‘বন্ধু আমার’, ‘শিমুল পারুল’, ‘ভাই আমার ভাই’, ‘লায়লা আমার লায়লা’, ‘দু:খিনি মা’, ‘বিধান’, ‘নাচে নাগিন’, ‘ভুল বিচার’, ‘সর্পরানি’, ‘বিক্রম’, ‘বাদশা ভাই’, ‘রাজা জনি’, ‘আমার সংসার’ ইত্যাদি হিট ছবিগুলোতে।
১৯৭০ সালের ৭ জুলাই সুনেত্রা জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে। পারিবারিক নাম তার রিনা সুনেত্রা কুমার। দুই ভাইবোনের মধ্যে সুনেত্রা ছোট। তিনি মাধ্যমিক শেষ করেছিলেন কলকাতার গখলে মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলে। পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি প্রাণিবিদ্যায় মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতি চর্চার প্রতি মনোযোগী ছিলেন তিনি। নাচ, গান ও অভিনয়ে নিজেকে তৈরি করেছিলেন।