বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত মেলান্দহ থানা পুলিশের ব্যতিক্রমী আয়োজনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীকে বিদায় সংবর্ধনা আন্তর্জাতিক এসএমই দিবসে গ্রাহকদের মাঝে বিনিয়োগের চেক প্রদান করলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি. বড় প্রকল্প নিয়েও কমলনগরের মেঘনার ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না! কেরাণীগঞ্জে ৫/৭ ফুট দেয়ালে চাপা পড়েছে পাঁচ পরিবারের সুখ নাজিরপুর উপজেলা সদরের রূপ পরিবর্তনে উপজেলা চেয়ারম্যান দীঘিনালায় উপজেলা চেয়ারম্যানদের বিদায়-বরণ সংবর্ধনা ঈশ্বরগঞ্জে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন সীতাকুন্ডে বিলীন হচ্ছে সৈকতের বনাঞ্চল বিপর্যস্ত উপকূল হুমকিতে পরিবেশ তারাকান্দায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি অর্থায়নে বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ

কুড়িগ্রামে অপরিকল্পিত সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে

শাহীন আহমেদ কুড়িগ্রাম
  • আপডেট সময় সোমবার, ১ জুলাই, ২০২৪

কুড়িগ্রামে উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত সেতু-কালভার্ট নির্মাণ করায় পানি প্রবাহ বিঘিœত হচ্ছে। এতে করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া পানিবন্দি হয়ে পড়ছে কৃষি জমি আর সাধারণ মানুষ। সরেজমিনে দেখাযায়, জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার অর্ন্তভুক্ত কচাকাটা থানার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের কচাকাটা-মুড়িয়ারহাট সড়কে অপরিকল্পিতভাবে একটি বক্স কালভার্ট তৈরি করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি)। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৯ মিটার (২৭ ফুট) দৈর্ঘ্যের বক্স কালভার্টটির কাজ শুরু হয় ২০১৯সালে এবং শেষ হয় ২০২১ সালে নির্মাণ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। বাড়ির উঠান ঘেঁষে কালভার্টটি তৈরি করায় কোনো সুবিধাই পাচ্ছে না স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ,কালভার্টটি নির্মাণের আগে স্থান পরিবর্তনের দাবী করলেও তা শোনা হয়নি। পরে বাড়ির উঠান লাগোয়া বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কালভার্ট নির্মাণের আগেই সেখানে মাটি ভরাট করে বসত বাড়ি করেন ফজর আলী, নাসির উদ্দিন, লাল চান মিয়া, আব্দুল খালেক।এতে সেখানে পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। একই চিত্র প্রায় ১৫/২০ বছর আগে কুড়িগ্রাম পৌরসভার অধিনে মিস্ত্রিপাড়ায় একটি সেতু এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে পৌরবাসীর। সেতুর মাঝামাঝি স্থানে বেশ কয়েকটি পরিবার তাদের বাড়ি নির্মাণ করেছে। ফলে পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা বাঁধা গ্রস্থ হওয়ায় পানিবন্দি থাকতে হয় পৌরবাসীকে। একটু ভারী বৃষ্টিপাত হলেই শহরের সরকারি, বেসরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠান পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এরমধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হলো, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়,ফায়ার সার্ভিস অফিস, খাদ্য গুদাম, হাসপাতাল পাড়া রৌমারী পাড়া, মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ, শিশু নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ পৌরসভার সিংহভাগ ওয়ার্ডের সড়ক ও বাড়ি ঘর পানিবন্দি হয়ে পড়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সরকারের টাকা নষ্ট হচ্ছে। আর সরকারের উন্নয়নের সুফল থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে সাধারণ নাগরিকদের। অপরদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধিনে সোনাহাট-মাদারগঞ্জ সড়কের কালভার্টের মুখে মাটি দিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। আবার অনেকে বিলের সেতুর পাশে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ফলে সঠিক ভাবে পানি প্রবাহ না হওয়ায় কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়া বিপাকে স্থানীয়রা। প্রভাষক মামুন বলেন, কুড়িগ্রাম পৌরসভা একটি আধুনিক পৌরসভা গড়তে পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। একটু বৃষ্টিতে শহরের অলিগলিসহ প্রধান সড়ক গুলো পানিবন্দি হয়ে যায়। এতে করে স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগে পড়েন। পানি নিষ্কাশনের জলাবদ্ধতা গুলো দখল মুক্ত করা এবং আধুনিক পৌরসভা গড়তে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বিত উদ্যোগে পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন জরুরি। কচাকাটার বাসিন্দা বুলবুলি বেগম বলেন, কয়েক মাস আগে সরকারি লোক এসে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দিয়ে গেছে। এখন পানি জমাট বাধলে এই এলাকার মানুষের আবাদী জমি এবং হেমতির আবাদ ক্ষতি হবে। পথচারী জয়নাল, মজিবর, জাফরসহ অনেকেই বলেন, মিস্ত্রি পাড়ার এই সেতুটি প্রায় ২০বছর আগে এলজিইডি নির্মাণ করেছে। এটি সরকারি জমিতে নয় ব্যক্তিগত মালিকানাধীণ জমিতে করা হয়েছে। তখন এই এলাকায় কোন রাস্তা না থাকায় ব্রিজটি করা হয়। এখন সেটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে। আর এই ব্রিজের কাজ শেষ হবার আগেই বেশ কয়েকটি পরিবার নিচু জমিতে বাড়ি করেছে। ফলে এদিক দিয়ে শহরের পানি বের হয়ে যাওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।এছাড়াও বাড়ি করলেও চলাচলের রাস্তা নেই। তাই বাধ্য হয়ে সেতুর রেলিং বেয়ে মই দিয়ে যাতায়াত করছে পরিবার গুলো। শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এসব পরিবারকে। কচাকাটা-মুড়িয়ারহাট সড়কে পথচারী গেন্দু ব্যাপারি, রফিকুল ইসলাম বলেন, সেতু নির্মাণে আগে বাড়ি করার জন্য ভিটে ভরাট করা হয়েছিল। পরে সেতুর নির্মাণের পর বাড়ি করা হয়েছে। এখানে এলজিইডি যখন ব্রিজ করতে আসে তখনই তাদেরকে আরও পূর্ব পাশে করার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা বলেন, প্লান যেখানে পাশ হয়েছ সেখানেই সেতু করতে হবে। কিছু করার নেই। এখন এই সেতু কোন কাজে আসছে না। সরকারের টাকা গুলো লস। কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, পানি প্রবাহের জন্য কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। কালভার্টের মুখ বন্ধ করার কোন নিয়ম নেই। এই বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত সেগুলো মুখ খুলে দেবার ব্যবস্থা নেবার আশ্বাস দেন তিনি। কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুজ্জামান বলেন, পৌরসভার অভ্যন্তরে সেতুটি পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় মেয়রকে অবহিত করা ছাড়া সেখানে এলজিইডি’র করণীয় নেই। তবে কচাকাটা-মুড়িয়ারহাট সড়কে সেতুর মুখে বাড়ি করার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে উচ্ছেদের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com