কক্সবাজারের একান্ন একর আবাসন নামের কথিত আবাসনের শতফুট উচু কাটা পাহাড় থেকে সৈকত পাড়ার সেলিমের বাসায় পড়লে ৮ ম শ্রেনীতে পড়ুয়া কিশোরী নিহত সহ কক্সবাজার শহরে প্রাণ গেছে ৬ জনের। এ ছাড়াো প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে বন-কর্তার অফিসের দুইশত মিটারের মধ্যেই কর্মচারী সেট তৈরী করছে কুটুমবাড়ী বার বি-কিউর মালিক নুরুল কবির পাশা। বনরেঞ্জারের তথ্যমতে পাহাড় কাটার অপরাধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বনবিভাগ একাধিক মামলা এবং ওই বনভুমিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তারপরো বহাল তবিয়তে নির্মান বসবাস-নিয়ন্ত্রন করছে দখলবাজ চক্র। ফলে সরকারী জমি দখলে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট বন কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজারের বাহারছড়া বনরেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা দীলিপ দাস আরো জানান, আষাঢ়ের ভারী বর্ষনে তিন সপ্তাহে শুধু শহরেই ৪০ স্পটে পাহাড় ধ্বস হয়ে দম্পতি ও শিশু সহ ৬ জন মারা গেছে। কুটুমবাড়ী রেষ্টুরেন্টের মালিকের বিরোদ্ধেও তিনটি মামলা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ভুঁয়া কাগজ তৈরী করে ওই জমিতে অবস্থান করছেন প্রভাব দেখিয়ে। পাওয়া তথ্যমতে, কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পাহাড় ধ্বসে মাটি চাপা পড়ে আরও দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ মোহরীপাড়ায় এবং শহরের কলাতলী সৈকতপাড়ায় পৃথক পাহাড় ধ্বস হয়। দক্ষিণ মোহরীপাড়ায় পাহাড়ধসে নিহত হন গৃহবধূ লায়লা বেগম(৩৪)। এ সময় আহত হন তার ছেলে মো. হানিফ। নিহত গৃহবধূর স্বামী ফেরদৌস আহম্মদ বলেন, রাত আটটার দিকে ভারী বর্ষণ চলছিল। এ সময় তারা ঘরের রান্নাঘরে রাতের খাবার খেতে বসেছিলেন সকলে এমতাবস্থায় পাহাড়ের এক খ- মাটি ধ্বসে পড়ে তাঁর ঘরের চালার ওপর। মাটিচাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তার স্ত্রী। পরে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিকে রাত আটটার দিকে কক্সবাজার শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কলাতলী একান্ন একরে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে কাটা পাহাড়ের মাটি ধ্বসে নীচের সৈকতপাড়া বসতঘরে পরলে ছয়জনের পরিবার মাটিচাপা পড়েন।স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা মাটি সরিয়ে পাঁচজনকে জীবিত উদ্ধার করলেও মিম নামের ১৪ বছর বয়সী (৮ ম শ্রেনীর ছাত্রী) কিশোরী কন্যার মৃত্যু হয়েছে। নিহত মিম গৃহকর্তা সেলিম(৩৬)এর কন্যা। বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার শহরে পৃথক পাহাড়ধসের ঘটনায় পাঁচ বছরের এক শিশু ও একজন গৃহবধূ মারা গেছেন। এর মধ্যে শহরের এবিসি ঘোনা এলাকায় মোহাম্মদ করিমের স্ত্রী জমিলা আক্তার(৩০) ও সিকদার বাজার এলাকার সাইফুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হাসান(৫) মাটিচাপা পড়ে মারা যায়। এ নিয়ে এক দিনে পাহাড়ধ্বসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২১ জুন শহরের বাদশাঘোনা এলাকায় পাহাড়ধসে এক দম্পতির মৃত্যু হয়। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে পাহাড়ধ্বসে ৬ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। এরপরও বন্ধ হয়নি পাহাড় কাটা ও পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস। ঝুঁকিতে রয়েছে বনবিভাগের অফিসের পিছনে শতাধিক ফুট উপরের টিনসেড় বাড়ী ও বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানির (ইঞঈখ) মাইক্রোওয়েব ষ্টেশনের রেষ্ট হাউজের মাথার উপরের বিশাল ঝুপড়ি ঘর।