মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন

সুন্দরবনে তিন মাসের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০২৪

গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রিমালে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন তার স্বাভাবিক রূপ ফিরে পেতে শুরু করেছে। বনের বিভিন্ন উদ্ভিদ প্রজাতি নতুনভাবে অঙ্কুরিত হতে শুরু করেছে। এ ছাড়া বর্ষার প্রভাবে বন এখন সুন্দরী, গোরান, গোলপাতা ও বনের আশপাশের অন্যান্য গাছে ভরপুর হয়ে উঠেছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাসের কারণে লবণাক্ত হয়ে যাওয়া পুকুরগুলো সম্প্রতি বর্ষার বৃষ্টির কারণে মিঠা জলে পরিপূর্ণ হয়েছে। যা সুন্দরবনকে পুনরুজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছে। আবার প্রাণশক্তিতে ভরে দিয়েছে। পর্যটক, জেলে, বননির্ভরশীল এবং মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার কারণে সুন্দরবন এখন একটি নির্মল নীরবতা উপভোগ করছে। যা মাছ ও বন্যপ্রাণীর উৎপাদন বৃদ্ধি, তাদের অবাধ বিচরণ, প্রজনন কার্যক্রম এবং নতুন উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে। ম্যানগ্রোভ বনে ঘূর্ণিঝড় রিমালের ক্ষতির বর্ণনা দিয়ে সুন্দরবনের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘গত ২৬ মে রিমালের ক্ষয়ক্ষতি আগের ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডরকে ছাড়িয়ে গেছে। জলোচ্ছ্বাস ২০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছেছিল। ঘূর্ণিঝড়ের সময় শতাধিক মিঠাপানির পুকুর লবণাক্ত পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে শতাধিক হরিণ ও অন্যান্য প্রাণী মারা যায়।’
এ ছাড়া অসংখ্য সুন্দরী, গোরান ও গোলপাতা গাছসহ অন্যান্য উদ্ভিদের প্রজাতি ধ্বংস হয়ে গেছে। যার ফলে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক বৈভব কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান এই বন সংরক্ষক।
তিনি আরও বলেন, ‘বন বিভাগ ইতোমধ্যে উদ্ভিদের পুনর্জন্ম এবং মাছ ও বন্যপ্রাণীর প্রজননের সময় দিতে গত ১ জুন থেকে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণ এবং জেলে, বাওয়ালি ও মধু সংগ্রহকারীদের প্রবেশ সীমিত করেছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার এক মাসের মধ্যেই সুন্দরবন তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে পেতে শুরু করেছে।’ পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন ও পর্যটনকেন্দ্রের ওসি হাওলাদার আজাদ কবির জানান, সুন্দরবন ৩৫০ প্রজাতির পাখি, ২৬০ প্রজাতির প্রাণী, ৩০-৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৮-১০ প্রজাতির উভচর এবং ২০০ প্রজাতির মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণী দ্বারা সমৃদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সুন্দরবনের পশ্চিম ও পূর্ব বিভাগে ২ লাখ ১৬ হাজার ১৪৩ জন পর্যটক ভ্রমণ করেন। এর মধ্যে বিদেশি পর্যটক ছিলেন ২ হাজার ১৪৩ জন। রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৩২ হাজার ৪৮০ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৭৭ জন পর্যটক ভ্রমণ করেন। এতে বিদেশির সংখ্যা ১ হাজার ১০৩ জন। রাজস্ব আদায় হয় ২ কোটি ২৪ লাখ ৮৩ হাজার ৫৮০ টাকা। বর্তমানে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। মে মাসে ভ্রমণ করেছেন ৫০৮ জন। রাজস্ব আয় হয়েছে ৪ লাখ ৪১ হাজার ২৪০ টাকা। ছোট-বড় প্রায় ৫০টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান সুন্দরবনে পর্যটক ভ্রমণকাজে নিয়োজিত আছে।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com