রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন

ভিপি নুর কারাগারে নির্যাতনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

রাজধানীর মহাখালীতে সেতু ভবনে হামলা ও অগ্নিসংযোগের মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে গণ অধিকার পরিষদ একাংশের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বনানী থানায় করা এ মামলায় গত ২১ জুলাই ঢাকার একটি আদালত ভিপি নুরের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। রিমান্ড শেষে গতকাল শুক্রবার তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদের আদালতে হাজির করা হয়।
নুরের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেন। জামিন শুনানিকালে আইনজীবীরা নুরকে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। শারীরিক অবস্থা ও সার্বিক বিবেচনায় তারা জামিন চান। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতে নুরের স্ত্রী মারিয়া আক্তার লুনা ও বাবা ইদ্রিস হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের পরিদর্শক আবু সাইদ মিয়া রিমান্ড ফেরত প্রতিবেদনে বলেন, ‘নুরকে আদালতের নির্দেশনা মেনে ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি জানিয়েছে, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে আদালতের রায়ের পর থেকেই তিনি তার ঘনিষ্ঠ নাহিদ ইসলাম, হাসানাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ, আক্তার হোসেন ও আহনাফদের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। পরে ১৮ জুলাই রাত ১০টায় নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে এবং মেসেজে কোটা সংস্কার এবং বর্তমান সরকারকে উৎখাত বা পতন করার জন্য তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। তখন নাহিদ ইসলাম ও সারজিস আলম দাবি দাওয়াগুলো মেসেজ করে লিখে দিতে বললে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া, ইন্টারনেট সচল করা, ছাত্রলীগ/যুবলীগের জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগসহ সরকারের পদত্যাগ ইত্যাদি দাবিদাওয়া লিখে দেন ভিপি নুর। ১৯ জুলাই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি তাদের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান এবং বর্তমান সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান।’
গত ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে সেতু ভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। ভবনে থাকা জিপ, কার, বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মোটরসাইকেলসহ ভবনের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় সেতু ভবনের কেয়ারটেকার রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলা করেন। মামলায় অভিযোগে বলা হয়, সেতু ভবনের ৩০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ডিবির দাবি কোটা আন্দোলনে এক নেতা নুরকে চার লাখ টাকা দেন: কোটা আন্দোলন চলাকালীন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে একজন নেতা চার লাখ টাকা দেন। সেই টাকা কীভাবে কীজন্য খরচ করা হয়েছে সেসব বিষয় জানার চেষ্টা করছে ঢাকা মহানগর (গোয়েন্দা) পুলিশ। গত শনিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, নুরকে আমরা রিমান্ডে নিয়েছিলাম। তার কাছ থেকে অনেক তথ্য পেয়েছি। সেই তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নুর একটা কথা স্বীকার করেছেন। আন্দোলন চলাকালীন একজন নেতা তাকে চার লাখ টাকা দিয়েছেন। আমরা সেই নেতাকেও নিয়ে এসেছি। তিনি চার লাখ টাকা নুরকে দিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। কী জন্য সেই নেতা নুরকে দিয়েছেন সেসব বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোটা আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে ডিজিটাল যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে বলেও জানান হারুন অর রশীদ।
ডিবিপ্রধান বলেন, এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি (বিজেপি) ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ পাঁচ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন আমাদের কাছে। তার কাছ থেকে কিছু বিষয় জানার চেষ্টা করছি। এদিকে রাজধানীর বনানীর সেতু ভবনে হামলার ঘটনায় করা মামলায় নুরুল হক নুরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল শুক্রবার (২৬ জুলাই) পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহম্মদ তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিকে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে পার্থকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com