ড্রোন উড়িয়ে প্রতিপক্ষ দলের অনুশীলনের ভিডিওচিত্র ধারণের অভিযোগে কানাডা নারী ফুটবল দলের ৬ পয়েন্ট কেটে নিয়েছিল ফিফা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে আগেই ৩ পয়েন্ট পেয়েছিল কানাডা। যে কারণে জরিমানার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে তখনই ৩ পয়েন্ট শোধ করেছিল কানাডা। গতকাল ফ্রান্সকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে জরিমানার বাকি ৩ পয়েন্টও শোধ করে দেয় কানাডার মেয়েরা। ফিফার কঠিন শাস্তির কারণে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কানাডার জন্য। তবে গতকাল ফ্রান্সকে হারানোর কারণে এখনও নকআউট পর্বে খেলার আশা বেঁচে আছে তাদের। এক্ষেত্রে শেষ ম্যাচেও জিততে হবে কানাডাকে। ড্রোন কেলেঙ্কারিতে মূলত অভিযোগ উঠেছিল কোচিং স্টাফদের বিরুদ্ধে। এখানে খেলোয়াড়দের কোনো ভূমিকা ছিল না বলে জানিয়েছে কানাডার অলিম্পিক কমিটি (সিওসি)। কিন্তু ঠিকই শাস্তি পেল ফুটবলাররা। পয়েন্ট কেটে নেওয়ার কারণে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে।
ফ্রান্সকে হারিয়ে ফিফার সেই শাস্তির প্রতিবাদ করেছেন কানাডার ফুটবলাররা। ম্যাচের ৫৮ মিনিটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরানো জেসি ফ্লেমিং বলেছেন, ‘এখন পুরো পৃথিবী আমাদের বিপক্ষে মনে হচ্ছে।’
মূল সময়ের খেলা ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের ১২ মিনিটে কানাডাকে জয়সূচক গোলটি এনে দেন ভ্যানেসা জাইলস। ম্যাচের পর নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি তিনি। ফিফার দেওয়া শাস্তির কথা মনে করে কেঁদে ফেলেছেন এই ফুটবলার। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমরা এতে (ড্রোন কেলেঙ্কারি) অংশ নেইনি। আমাদের এমন শাস্তি দেওয়া হয়েছে, যেন ডোপিংয়ে ধরা পড়েছি। আমরা কিছুই করিনি। এমন একটি বিষয়ে নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি, যার উপর আমাদের কোনো নিয়্ন্ত্রণ নেই।’
জাইলস আরও বলেন, ‘আমরা কোনো সুবিধা নিইনি। আমরা মাঠে নেমেছি নিজেদের উজাড় করে খেলার জন্য। সারা বছর এ জন্যই কষ্ট করেছি। যে কারণে এমন অনিয়ন্ত্রিত কিছুর (পয়েন্ট কর্তন) জন্য প্রচ- হতাশা আর রাগই হয়েছে শুধু।’ ড্রোন কেলেঙ্কারির অভিযোগে দলের হেড কোচ বেভ প্রিস্টম্যানকে এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। এই সময়ে ফুটবল সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে অংশ নিতে পারবেন না তিনি। প্রিস্টম্যানের দুই সহকারী জোসেফ লম্বার্ডি ও জেসমিন মান্দারকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
প্রথম দুই ম্যাচে জিতলেও ফিফার পয়েন্ট কাটার কারণে কানাডার ঝুলিতে এখন কিছুই নেই। তবুও কোয়ার্টারে খেলার সুযোগ রয়েছে তাদের। এক্ষেত্রে আগামী বুধবার শেষ ম্যাচে কলম্বিয়াকে হারাতেই হবে কানাডাকে। শুধু হারালেই হবে না, মেলাতে হবে পরিসংখ্যানও।
এবারের অলিম্পিকে ১২ দল তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলছে। প্রতিটি গ্রুপ থেকে সেরা দুটি দল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলবে। এছাড়া তৃতীয়স্থানে থাকা ৩টি দলের মধ্যে পয়েন্টের ভিত্তিতে সেরা দুটি দলও কোয়ালিফাই করবে সেটা আটে।