বাংলাদেশের ক্রিকেট রূপকথায় যোগ হলো আরেকটি নতুন অধ্যায়। যে অধ্যায় বাংলাদেশকে ভাসাচ্ছে নিদারুণ আনন্দে। রাওয়ালপিন্ডির সবুজ গালিচায় বাংলাদেশ মাতলো আনন্দে। পাকিস্তানকে টেস্টে হারানোর পর এবার সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমবার পাকিস্তানের মাটিতে টেস্ট জয়ের পর তাদের মাটিতেই সিরিজ জয়ের আনন্দ কিভাবে প্রকাশ করবেন অধিনায়ক, সেই ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী মে নাজমুল বলেছেন, ‘এটি আমাদের কাছে অনেক কিছুৃ ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। সত্যিই খুব খুশি আমরা। এখানে আসার আগে আমাদের লক্ষ্য ছিল জয়। সবাই যেভাবে নিজেদের কাজটা করেছে, তাতে খুবই খুশি আমি।’
শুধু একজন-দুজনকে এই সাফল্যের কৃতিত্ব দিতে না অধিনায়ক। শান্ত দলের প্রত্যেককে সমান কৃতিত্ব দিতে চান। দলীয় ঐক্যের ছবিই আঁকলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘সবাই অবদান রেখেছে এই সিরিজে। দলীয় পারফরম্যান্সে এই সাফল্য এসেছে। যারা খেলার সুযোগ পায়নি, তারাও মাঠের বাইরে অনেক পরিশ্রম করেছে। আমরা সবসময় তাদের কথাই বলি যারা রান করে বা উইকেট নেয়। কিন্তু সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই জয় এসেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাদের ওয়ার্ক এথিক। সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে কাজ করেছে তারা, সেটির ফল পেয়েছে। সবাই নিজের প্রতি সৎ থেকে কাজ করেছে।’
প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটে জয় পায় বাংলাদেশ। টেস্টে বাংলাদেশের এগিয়ে যেতে না পারার সবচেয়ে বড় কারণ ধারাবাহিকতার ঘাটতি। অথচ প্রথম টেস্টে অবিশ্বাস্য সাফল্যের পরও বাংলাদেশ এই টেস্টে নিজেদের পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছে। চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায়, তীব্র লড়াইয়ের জেদ নিয়ে মাঠে নেমে পাকিস্তানকে সুযোগ না দিয়ে ম্যাচটা জিতে নিয়েছে।
দলের জয়ের মানসিকতার কথা তুলতে গিয়ে নাজমুল বলেছেন, ‘জিততে মরিয়া ছিল সবাই। সেটিই দলের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আশা করি, এটা ধরে রাখতে পারব আমরা। জয়ের খানিকটা চোট ছিল বলে খেলতে পারেনি। কিন্তু সাদমান যেভাবে ব্যাট করেছে, বিশেষ করে প্রথম টেস্টে ৯৩ রানের ইনিংসটি ছিল দুর্দান্ত। জাকির গতকালকে যেভাবে ৬-৭ ওভারে ব্যাট করেছে, মোমেন্টাম আমাদের পক্ষে চলে এসেছে। ওদের কাছ থেকে আমরা এমন কিছুই চাই।’
বাংলাদেশের পরের সিরিজ ভারতের বিপক্ষে এই মাসেই। ১৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ খেলবে ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট চেন্নাইয়ে। পাকিস্তান থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস শান্ত কাজে লাগাতে চান ভারতেও, ‘পরের সিরিজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজ আমাদেরকে দারুণ আত্মবিশ্বাস জোগাবে। মুশি ভাই, সাকিব ভাই, লিটন, মুমিনুল, তারা অনেক খেলেছে এবং দারুণ অভিজ্ঞ। সেই অভিজ্ঞতা তারা মেলে ধরেছে এখানে। আশা করি, ভারতে তারা আরও ভালো খেলবে।’
সিরিজ সেরা নির্বাচিত হওয়া মেহেদী হাসান মিরাজের থেকেও বড় প্রত্যাশা তার, ‘এই কন্ডিশনে যেভাবে প্রথম ইনিংসে বল করেছে সে, তা দারুণ ছিল। যেভাবে কাজ করেছে সম্প্রতি, কোচদের সঙ্গে কথা বলেছে, সবই দারুণ। আশা করি, ভারতের বিপক্ষে এটা ধরে রাখবে।’