পিরোজপুুরের ইন্দুরকানীতে ২জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কাঙ্খিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ইন্দুরকানীর লক্ষাধিক মানুষ। চিকিৎসকের ১২টি পদের মধ্যে ৯টি পদ শূন্য রয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বাধ্য হয়ে এ উপজেলার রোগীদের বরিশাল, খুলনাসহ দূরদূরান্তে গিয়ে চিকিৎসা সেবাগ্রহণ করতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে ইন্দুরকানী উপজেলার ৩১শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ২০০৬ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। ২০০৮ সালের নভেম্বরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ভবনটি স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় বিশিষ্ট উন্নতি করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্রটি ভবন ৫০শয্যার হলেও এখন পয়র্ন্ত জনবল দেওয়া হয়নি। শুধু সুপেয় পানি সরবরাহ নিয়ে জটিলতার কারণে র্দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতালের আন্তবিভাগ চালু করা যায়নি। গত বছরের অক্টোবরে হাসপাতালের আর্ন্তবিভাগ চালুকরা হয়। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ১২টি পদ রয়েছে। এরমধ্যে ডেন্টালসার্জন ও আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তার (আরএমও) পদ শূন্য রয়েছে। মেডিসিন, শল্য, গাইনি ও আবেদনবিদ পদের চারটি জুনিয়র কনসালট্যান্ট সহ ৬টি পদশূন্য রয়েছে। এছড়া চিকিৎসা কর্মকর্তার তিনটি পদের মধ্যে একটি পদ শূন্য রয়েছে। দুজন চিকিৎসা কর্মকর্তা ও সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া তিনজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির চিকিৎসা কার্যক্রম। এর বাইরে আয়া ও বাবুর্চির দুটি করে পদ থাকলেও এক জন করে কর্মরত রয়েছেন। ওয়ার্ড বয়ের দুটি পদের একজন প্রেষণে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে পদায়ন করাহয়েছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ডাঃ নুরউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ২০২২ সালে ফ্রেব্রুয়ারী মাসে এই হাসপাতালে ৯জন ডাক্তার পোস্টিং দেওয়া হলেও যোগদান করেন ৮জন। দুই বছর যেতে না যেতেই বদলী জনিত কারণে ৬জন ডাক্তার অন্যত্র পোস্টিং নিয়ে যায়। বর্তমানে তিন জন ডাক্তার আছেন তাদের মধ্যে ১জন ডাক্তার হাসপাতালে স্থায়ী পোস্টিং আছে বাকী ১জন বালিপাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সএ পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। ১জন ডাক্তার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ্যাটাসমেন্ট পোস্টিংএ আছেন। এমন অবস্থায় জরুরী বিভাগ, অন্ত বিভাগ ও বর্হিবিভাগের রোগীদের গুনগত সেবা দিতে ডাক্তাররা হিমশিম খাচ্ছে। সকল ডাক্তার সম্পাহে ৭২ ঘন্টাই দায়িত্ব পালন করেন। এতে ডাক্তাররা শারীরিক ভাবে ক্লান্ত হয়ে পরেছেন। এই হাসপাতালের ১জন ওয়ার্ডবয় ও ১জন নৈশ প্রহরী পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে কাজ করছে। এই অঞ্চলের মানুষের মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে হলে শূণ্যপদে কনস্যালটেন্ট মেডিকেল অফিসার, এসএসসিএমও পদায়ন সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে থাকা কর্মরতদের ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। ইন্দুরকানীউপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারপরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ননী গোপাল জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৪ বছর পর অন্তর্বিভাগের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়। গাইনি ও অবেদনবিদ জুনিয়র কনসালট্যান্ট পদের চিকিৎসক না থাকায় এবং অস্ত্রোপাচারের সরঞ্জাম না থাকায় প্রসূতি মায়েদের অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না। পিরোজপুর সিভিলসার্জন মোঃ হাসনাত ইউসুফ জাকী বলেন, ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সহ শূন্য পদ গুলোতে নিয়োগের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আশাকরি অতি দ্রুত সমস্যা সমাধান হবে।