চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে মা ইলিশের প্রজনন রক্ষা অভিযানের প্রস্তুতিকালে দুর্বৃত্তদের হামলায় নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের অন্তত ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দিনগত রাতে আমিরাবাদ এলাকায় মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। রাতেই অজ্ঞাতপরিচয় ৮০ থেকে ৯০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারী আতিকুর রহমান। আহত ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও মোশারফ হোসেন, স্পীডবোটের চালক রনি মিয়া, নৌকার মাঝি আলী আকবর, মাঝির সহকারী আবদুল ছাত্তার ও মো. কাউছার, মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য ইমরান হোসেন, মো. রাসেল, কামাল হোসেন ও জসিম উদ্দিন। আহতদের ঘটনার পরেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা সেখানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন। নৌ পুলিশ ও আহতরা জানান, গতকাল রাত ৮টার দিকে মেঘনা নদীর আমিরাবাদ এলাকায় মা ইলিশ রক্ষার টাস্কফোর্সের অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল। এ সময় স্পীডবোট ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ছিলেন মৎস্য কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী (ক্ষেত্র সহকারী) ও মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির কয়েকজন সদস্য। হঠাৎ প্রায় শতাধিকসহ একটি বড় ট্রলার সেখানে আসে। তাঁরা অতর্কিতভাবে বাঁশ, ইট ও চাপাতি নিয়ে টাস্কফোর্সের অভিযানকারী দলের ওপর হামলা চালান। এতে মোট ১০ জন গুরুতর আহত হন। তাঁদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাতে এই বিষয়ে মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. কামরুজ্জামান বলেন, এই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি হওয়ায় আমরা কাউকে এখনো আটক করতে পারিনি। তবে সহসাই হামলার সাথে জড়িত জেলেদেরকে সনাক্ত করে আটক করা হবে। মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর থেকে প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল দেয়া হয়। এরপরও তাঁরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মেঘনায় মাছ ধরছেন। আবার অনেকে ধরার চেষ্টা করছেন। এটি খুবই দুঃখজনক। হত্যার উদ্দেশ্যেই এসব অভিযানকারীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় আরও জোরালো অভিযান চালানো হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক জানান, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও মারধরের অভিযোগে মামলা করেছেন মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্র সহকারী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান। এ ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।