সম্প্রতি চীন তাদের তিনজন নভোচারী নিয়ে একটি নভোযান উৎক্ষেপণ করেছে,যেখানে চীনের প্রথম নারী স্পেসফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ারও রয়েছেন। শেঞ্জো ১৯ নামক এই নভোযানটি ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মহাকাশে গিয়ে সফলভাবে একটি মহাকাশ স্টেশনের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। চীন এই মিশনের মাধ্যমে ছয় মাস ধরে মহাকাশ স্টেশন ব্যবহার করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মহাকাশের বাইরের কাজ সম্পন্ন করবে।চীন ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
চীন সরকার ঘোষণা করেছে যে শেঞ্জো ১৯ উৎক্ষেপণ একটি “সম্পূর্ণ সফলতা”। এটি ২০২৪ সালে চীনের মহাকাশ গবেষণার জন্য পরিকল্পিত ১০০টি উৎক্ষেপণের মধ্যে একটি, যা দেশের মহাকাশ গবেষণার দ্রুত অগ্রগতির অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে প্রতিযোগিতার মধ্যে চীন এই বিশাল পরিসরে এগিয়ে যেতে চায়। শেঞ্জো ১৯ উৎক্ষেপণের সময় চীনে ব্যাপক উৎসাহ ও উল্লাস দেখা গেছে।নারী নভোচারী স্পেসফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে এই মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন, যা দেশের মহাকাশ অভিযানে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে। বেজিংয়ে মহাকাশ স্টেশনে, শেঞ্জো ১৯ ক্রু তিনজন অন্যান্য নভোচারীর সাথে মিলিত হয়েছে যারা শেঞ্জো ১৮ এর অধীনে কাজ করছেন এবং ৪ নভেম্বর পৃথিবীতে ফিরবে। এটাই চীনের তরুণ নভোচারীদের মধ্যে সবচেয়ে সফলতার মুহূর্ত।নভোচারীরা বলেছে যে, “আমরা নিশ্চিত করছি আমাদের মিশনে থাকবো এবং চীনের মহাকাশ কর্মসূচিতে নতুন সাফল্য অর্জন করব।”
চীন ইতিমধ্যেই চাঁদের উপর বিভিন্ন গবেষণা পরিকল্পনা করেছে।চীনের লক্ষ্য হলো এই অঞ্চলের সম্পদগুলোকে কাজে লাগানো। চাঁদে হেলিয়াম, ধাতু এবং অন্যান্য মূল্যবান খনিজ রয়েছে যা ভবিষ্যতে বড় অর্থনৈতিক লাভের দিকে নিয়ে যেতে পারে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চিনের মহাকাশ পরিকল্পনাকে একটি সামরিক কর্মকা- হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তবে চীন মহাকাশ গবেষণাকে মানবতার জন্য একটি সমষ্টিগত মিশন হিসাবে উল্লেখ করছে। চীন তার মহাকাশ গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে, তবে তাদের সামনে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।তবে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য তারা আত্মবিশ্বাসী এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মহাকাশ গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, কারণ চীনের জন্য তা জাতীয় গর্ব এবং ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মহাকাশের এই নতুন প্রতিযোগিতা কেবল চাঁদে পৌঁছানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও। তথ্যসূত্র : বিবিসি