ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কুমিল্লার দাউদকান্দিতে রাতের আধাঁরে কাটা হচ্ছে মহাসড়কের ডিভাইডার। মহাসড়কে প্রতিনিয়তই ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। রাতের আঁধারে সড়কের মাঝখানে অবৈধভাবে কেটে দেওয়া হচ্ছে ডিভাইডার। কাটা ডিভাইডারে পার হচ্ছে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজিসহ ছোট যানবাহন ও পথচারীরা। এতে মহাসড়কে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সঙ্গে বেড়ে চলেছে প্রাণের ঝুঁকি। গত এক বছরে এই মহাসড়কে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রাণহানি ঘটেছে। বিগত সরকারের সময় মহাসড়কে অবৈধ তিন চাকার যানবাহন বন্ধ থাকলেও আগস্টের পর থেকে অবাধে চলছে। চার লেন সড়কের বেশিরভাগ কাটা ডিভাইডার ঢালাই ব্লক এবং আরসিসি দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেয় সড়ক বিভাগ। তবে, কয়েকদিন পরেই অজ্ঞাত একটি চক্র রাতের আঁধারে এই ডিভাইডার আবার ভেঙে ফেলছে, যার কারণে সড়ক পারাপারের সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কের গৌরীপুর অংশে ঢাকামুখী লেনে দ্রুত গতির গাড়ী এবং স্থানীয় যানবাহনের জন্য ডিভাইডারের মাধ্যমে ভাগ করা হয়। সড়ক বিভাগ এসব কাটা ডিভাইডার মেরামতের মাধ্যমে বন্ধ করে দিলেও কয়েক দিনের মধ্যেই রাতের আঁধারে আবারও সেগুলো ভেঙে ফেলা হচ্ছে বা সরিয়ে ফেলছে অজ্ঞাত একটি চক্র। সড়কটির বারপাড়া এবং হাসানপুর কলেজের সামনের অটোরিক্স ও সিএনজি পারাপারের জন্য ডিভাইডারের ব্লকগুলো খুলে ফেলেছে। এসব অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পারাপার হচ্ছে পথচারীরা। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। স্থানীয় অনেকেই জানান, মহাসড়কে চলাচলকারী ছোট পরিবহনগুলো ইউটার্ন করতে গেলে অনেক পথ যেতে হয়। অনেকেই নিজেদের প্রয়োজনে রাতের আঁধারে ডিভাইডার কাটছেন। অনেকবারই সেসব বন্ধ করেছে সড়ক বিভাগ। কিন্তু বন্ধ করার কয়েকদিন পর দেখা যায় ডিভাইডারগুলো আবারও ভেঙে ফেলেছেন। প্রথমে ছোট গাড়ি পারাপারের রাস্তা করা হলেও তা আস্তে আস্তে ভেঙে ভেঙে বড় হয়। এসব ভাঙা ডিভাইডারে পারাপারের সময় বড় দ্রুতগামী গাড়ি না দেখে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) দাউদকান্দি শাখার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, মহাসড়কটির ব্যস্ততম স্থান হলো গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড। ঢাকামুখী সরাসরি লেনে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করাতে ডিভাইডার ভাঙা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে পথচারী ও যাত্রী পারাপারে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভবনা রয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত ভাঙা অংশ মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু ওবায়েদ বলেন, কয়েকদিন আগে আমি এখানে যোগদান করেছি। খোঁজ খবর নিয়ে সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে দুর্ঘটনারোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু সালেহ বলেন, মহাসড়কটির দাউদকান্দি অংশে দুর্ঘটনা রোধে ডিভাইডারের কাটা অংশগুলো অনেকবারই বন্ধ করা হয়েছে। আর দুর্ঘটনা হ্রাস করতে ডিভাইডার ও ফুটওভার ব্রীজ করা হয়েছে। কিন্তু জনসাধারণ সেটা ব্যবহার করতেছে না, উল্টো ভেঙে ফেলছে বা নষ্ট করছে। এখানে যারা ব্যাবহারকারী, জনপ্রতিনিধি, হাইওয়ে পুলিশ ও সাংবাদিকদের প্রতি আহবান রাখছি যাতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার জন্য সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।