সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন

যাত্রাবাড়ীর কলেজে ছাত্রবেশে পরিকল্পিত হামলা

সাদেক মাহমুদ পাভেল:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে: পুলিশ
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রাবাড়ীর ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ছালেহ উদ্দিন। গত রোববার বিকেল চারটার দিকে কলেজের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে এই আশ্বাস দেন তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তা ছালেহ উদ্দিন বলেন, পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীরা ছাত্রবেশে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করতে এই হামলা ও কোটি টাকার মালামাল লুটপাট হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে, মামলা হবে।
এই হামলা ঠেকানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে দাবি করে পুলিশের উপকমিশনার ছালেহ উদ্দিন বলেন, যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে আসার সময় হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু হামলাকারীরা সেটি তোয়াক্কা না করে একত্র হয়ে হামলা করেছে, ধ্বংসাত্মক কর্মকা- করেছে। এই হামলায় স্বার্থান্বেষী মহল জড়িত। এ–জাতীয় ঘটনা বরদাশত করা হবে না। এ জন্য এলাকাবাসীর সহায়তা চান তিনি।
পুলিশ এ ঘটনা ঠেকাতে না পারার কারণ হিসেবে উপকমিশনার ছালেহ উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্ট এই এলাকায় পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। এখন ওই সময়ের কোনো পুলিশ সদস্য নেই। সব পুলিশ সদস্য নতুন এবং সংখ্যায় কম। সৎ ও যোগ্য পুলিশ সদস্যদের বাছাই করে গ্রাম-গঞ্জ থেকে এখানে আনা হচ্ছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য এলাকাবাসীকে সহায়তা করতে হবে।
লুটপাটের মালামাল কারও বাসায় থাকলে, তার বিষয়ে গোপনে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানান পুলিশ কর্মকর্তা ছালেহ উদ্দিন। তিনি বলেন, কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, এখন আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে। সবাইকে এ বিষয়ে সহায়তা করতে হবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে হবে। এ সময় তিনি সবাইকে কলেজের সামনের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
উপকমিশনার ছালেহ উদ্দিনের বক্তব্যের পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা সবাইকে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করেন। এরপর কলেজের সামনে থেকে ধীরে ধীরে সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়। আশপাশের এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা মোতায়েন আছেন।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী গিয়ে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালান। ভাঙচুর ও লুটপাটের পর বেলা একটার দিকে সেখানে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এর মধ্যে কলেজের ভেতরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের কয়েকজন আটকা পড়েন। পরে তাঁদের ব্যাপক মারধর করা হয়। দুপুরে অন্তত তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় কলেজের ভেতর থেকে বের করতে দেখা গেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর আগে গতকাল রোববার ভুল চিকিৎসায় অভিজিৎ হাওলাদার নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগের জের ধরে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালান মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগের দিনের হামলার জের ধরে আজ মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালানো হয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী বিজয় আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল মাহবুবুর রহমান কলেজের শিক্ষার্থীরা আমাদের কলেজে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। আমরা এর প্রতিশোধ নিতে এসেছি। মোল্লা কলেজে ঢুকে যা পেয়েছি, তা নিয়ে এসেছি।’ হামলার পর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে গিয়ে ভাঙচুরের চিত্র দেখা গেছে। কলেজটির ১০তলা ভবনের সব তলায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে। লুটপাট করা হয়েছে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও আসবাব। মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের কলেজে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এরপর ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। কলেজের টাকাপয়সাও লুট করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com