বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে চীনের দিকে ঝুঁকছে হিন্দুপ্রধান নেপাল জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: আমু, কামরুলকে ১৭ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ ভারতের শাসকগোষ্ঠী দু’দেশের জনগণের মধ্যে সম্প্রীতি চায় না : নাহিদ ইসলাম মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত লালমনিরহাটের কৃষকরা নামিবিয়ায় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট শেখ হাসিনা সরকার সবকিছু ধ্বংস করে গেছে মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরী’র ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ ২১শে আগস্ট মামলার ফরমায়েশি তদন্ত করে পুরস্কার পেয়েছিলেন কাহ্‌হার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অব্যাহত পদক্ষেপগুলোকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ধনবাড়ীতে রসের হাড়ির খেজুর গাছ আজ বিলুপ্তির পথে

জহিরুল ইসলাম মিলন (ধনবাড়ী) টাঙ্গাইল
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

শীতের আগমনের শুরুতেই গ্রামীণ সংস্কৃতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয় খেজুর গাছ হতে রস সংগ্রহের ধুম। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে খেজুর রসের সমারোহ। গ্রামে এখন শহুরে ছোঁয়া। শহরায়নের আগ্রাসনে প্রকৃতির ঐতিহ্য খেজুর গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে খেজুর গাছও তত কমছে। সরেজমিনে ধনবাড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো জায়গায় কিছু কিছু খেজুর গাছ রয়েছে। যেসব স্থানে এক সময় রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে অসংখ্য খেজুর গাছ ছিল সেসব স্থানে এখন নেই খেজুর গাছ। গ্রামের কোনো কোনো সড়কের পাশে কিছু গাছ থাকলেও তাতে তেমন রস হয় না বলেন স্থানীয়রা জানান। জানা গেছে, শীতের শুরুতেই রস সংগ্রহের জন্য কাটা হয় খেজুর গাছ। গাছের অগ্রভাগের একপাশে বেশ খানিকটা কেটে পরিষ্কার করা হয়। পরে বাঁশের কঞ্চি কেটে কাঠি তৈরি করে গেঁথে দেওয়া হয়। তার ঠিক নিচেই ঝোলানো হয় মাটির হাঁড়ি। গাছের কাটা অংশ বেয়ে রস কাঠির মাধ্যমে ফোঁটায় ফোঁটায় হাঁড়িতে এসে জমা হয়। ঠা-া আবহাওয়া, মেঘলা আকাশ আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল পর্যাপ্ত রসের জন্য উপযোগী। এ সময়ে প্রাপ্ত রসের স্বাদও ভালো থাকে। কাকডাকা ভোরে খেজুরের রস, মন মাতানো ঘ্রাণ গ্রামীণ জনপদে বিরল। শীতের সকালে খেজুর রস, মিষ্টি রোদ, কৃষক-কৃষাণির হাসি দারুণ প্রাণশক্তি। বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ এই ঐতিহ্য খেজুর গাছ ও দেখা দিয়েছে রসের সংকট। একসময় গ্রামীণ জনপদে খেজুর রস নিয়ে পায়েস পিঠার উৎসব, গভীর রাতে হাঁড়ি থেকে চুরি করে রস খাওয়া অনেকের শৈশবের স্মৃতি অম্লান হয়ে আছে আজো। গ্রামীণ মেঠোপথ আর খেজুর গাছের সারি আর গাছে রসের হাঁড়ি আজ আর দেখা মিলে না। দেখা মিলে না পাখি আর কীট-পতঙ্গের গাছে গাছে ঘুরে রস খাওয়ার দৃশ্য। খেজুর গাছ বিলুপ্তির কারণ হিসেবে জানা গেছে বিভিন্ন কারণে খেজুর গাছ কর্তন, মরে যাওয়া, তদারকির অভাব এবং নতুন চারা রোপণ না করা। গাছ কমলেও কমেনি খেজুর রসের গ্রাহক সংখ্যা। কমেনি এর কদরও। ঐতিহ্যবাহী কিছু গাছের মধ্যে খেজুর গাছ ছিল অন্যতম। খেজুরের রস ও খেজুরের মিঠার গন্ধে গ্রামীণ জনপদ মৌ মৌ করত। শীত আসলেই গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়ত খেজুর গাছ রসের উপযোগী করতে পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত হতেন। এতে গাছিরা এই সময় অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতেন। বিভিন্ন পিঠা, পুলি ও পায়েসসহ নানা প্রকার খাবার তৈরির জন্য খেজুরের রস ছিল অন্যতম উপাদান। এ জন্য গাছিদের চাহিদার কথা বলে রাখতে হতো। ফলে যাদের খেজুর গাছ ছিল না তারাও রস খাওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন না। তখন শীতে আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করত। বিশেষ করে পৌষ-মাঘ শীত মৌসুম এলে গাছিদের আনন্দের সীমা থাকত না। খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য মহাব্যস্ত হয়ে পড়তেন তারা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এই খেজুরগাছ আজ অস্তিত্ব সঙ্কটে। যে হারে খেজুরগাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপণ হয় না। শীত মৌসুমে সকালে খেজুরের তাজা রস যে কতটা তৃপ্তিকর তা বলে শেষ করা যাবে না। কৃষি বিভাগ ও কখনো খেজুরের গাছ আবাদ নিয়ে কথা বলতে বা, কৃষি মেলায় খেজুরের গাছ রোপণে উদ্বুদ্ধ করার পরামর্শ দিতে দেখা যায় না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com