রংপুরের বদরগঞ্জে চিহিৃত দাদন ব্যবসায়ীদের অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করণসহ দাদন ব্যবসায়ীদের আগ্রাসন থেকে পরিত্রান চেয়ে মানববন্ধন করেছে সর্বস্বান্ত হওয়া নিষ্পিষিত এলাকাবাসী। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ রামনাথপুর বটতলী বাজারে ভুক্তভোগীদের ব্যানারে ওই মানববন্ধনে অংশ নেয় শতশত নারী পুরুষ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এই এলাকার দাদন ব্যবসা খ্যাত চৌরির বিল গুচ্ছ গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ও মনুজা বেগমের নেতৃত্বে মমিনা. মুক্তা.সাগিরা. মোস্তারিনা.মনজিরা ও মমেজা বেগম সহ এক ডজন দাদন ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে এলাকার অভাবগ্রস্থ মানুষকে ফুসলিয়ে তাদেরকে চড়া সুদের উপর ঋণ প্রদান করে আসছে। তারা গ্রামের অর্থাভাব লোকজনের দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে এই দাদন ব্যবসার মাধ্যমে বছরের পর বছর ধরে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষলক্ষ টাকা। তারা এই অবৈধ ব্যবসা করে বর্তমানে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ ও কলাগাছ ফুলে বটগাছ বনে গেছে। যা কিনা রাজশাহী কৃষি উন্নয়ণ ব্যাংক বদরগঞ্জের ট্যাক্সেরহাট শাখায় তাদের ব্যাংক একাউন্ড তলব করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। ওই ব্যাংকে প্রত্যেক দাদন ব্যবসায়ীর একাউন্ট রয়েছে লক্ষলক্ষ টাকা। অথচ তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোন অভিযোগ করেও ফল পাওয়া যায়না। উল্টো সংঘবদ্ধ দাদন ব্যবসায়ীদের দ্বারায় অভিযোগকারীরা পথে ঘাটে লাঞ্চিত হয়। এবিষয়ে মানবন্ধনের আয়োজনকারী দক্ষিণ রামনাথপুর গ্রামের ভুক্তভোগী গোলাপ চন্দ্র, স্বপন কুমার, রতন কুমার, নারায়ন চন্দ্র, লিটন চন্দ্র, শ্রীমতি মেনোকাবালা, স্মৃতি রানী ও বাচ্ছানী রানী ও অনিতা রানী অভিযোগ করে বলেন, রামনাথপুর ইউনিয়নের চৌরির বিল আবাসন প্রকল্পে একডজন দাদন ব্যবসায়ী রয়েছে। তাদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীদের দলনেতা। তাদের প্রকার দাদন ব্যবসার লাইসেন্স না থাকলেও তারা স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে অনায়াসে এই অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সকলে সরকারী বস্তিতে (গুচ্ছ গ্রাম) বসবাস করলেও দাদন ব্যবসায় বেশ পারদর্শী হয়ে উঠেছে। ব্যাংকের ফাঁকা চেক, জমির দলিল ও ফাঁকা স্ট্যাম্প হলেই তাদের কাছে যে কোন পরিমান ঋণ পাওয়া যায়। ঋণ গ্রহণের পর থেকে প্রতি হাজারে সপ্তাহে ২শত টাকা করে সুদ দিতে হয়। কোন সপ্তাহে সুদের টাকা দিতে না পারলে পরবর্তীতে চক্সবৃদ্ধিহারে তাকে সুদ দিতে হবে। তারা রাতের অন্ধকারে আমাদের বাড়ীতে লোকজন নিয়ে এসে আমাদের কাছ থেকে জোরকরে সুদের টাকা আদায় করে থাকে। কেউ সাপ্তাহিক সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাকে প্রকাশ্য মারডাংসহ নানা রকম হয়রানী করা হয়। ওই সব দাদন ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে আমাদের প্রতিবেশী বিবিদাস, অনুকুল চন্দ্র ও ধনেশ^র চন্দ্রসহ ১৪-১৫টি পরিবার সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হয়ে বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা এই এলাকার শতাধিক সংখ্যালঘু ভুক্তভোগী দাদন ব্যবসায়ীদের সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আজ সর্বস্বান্ত হয়েছি। সেইসাথে তাদের বিরুদ্ধে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরে গণস্বাক্ষর সম্বলিত লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি। তারপরেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এই সব চিহিৃত দাদন ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে তারা আমাদের অস্তিত্ব বিলিন করে ছাড়বে। অপরদিকে মানববন্ধন শেষে দাদন ব্যবসায়ীদের নেতা আব্দুর রাজ্জাক ও মনুজা বেগমের সাথে এপ্রসঙ্গে জানতে চাইলে তারা সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয়ে তাদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এমনকি তারা প্রকাশ্যে ভুক্তভোগী সনাতন ধর্মাবলম্বিদের ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকী দেয়।