বিজিবি মোতায়েন: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪
তাবলীগ জামাতের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে জমায়েত নিষিদ্ধ করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গতকাল বুধবার বেলা দেড়টায় এ বিজ্ঞপ্তি জারির পর বাদ জোহর থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দান ত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন জিএমপি পুলিশ কমিশনার ড. মোহাম্মদ নাজমুল করীম খান।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ আইন ২০১৮-এর ৩০ ও ৩১ ধারায় পুলিশ কমিশনারকে দেয়া ক্ষমতাবলে আজ ১৮ ডিসেম্বর তারিখ ১৪:০০ ঘটিকা হতে (দুপুর ২টা) পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় নি¤œলিখিত আদেশ বলবৎ থাকবে। আদেশগুলো হলো : (ক) বিশ্ব ইজতেমা মাঠে জনসাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলো। (খ) পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা মায়দানসহ আশপাশের তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে দু’ বা ততোধিক ব্যক্তি একসাথে ঘোরাফেরা জমায়েত এবং কোনো মিছিল-সমাবেশ করতে পারবে না। (গ) কোনো প্রকার অস্ত্র-শস্ত্র, ছুরি, লাঠি, বিস্ফোরক দ্রব্যাদি বা এ জাতীয় কোনো পদার্থ বহন করতে পারবে না। অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জনস্বার্থে এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো।’
টঙ্গীতে ইজতেমা মাঠে দুপক্ষের সংঘর্ষ, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪, বিজিবি মোতায়েন: টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দান দখলকে কেন্দ্র করে যোবায়ের ও সাদপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ৪ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন। আহতদের টঙ্গী সরকারি হাসপাতালসহ আশপাশের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। সংঘর্ষ শুরু হয় বুধবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে।
নিহতরা হলেন- আমিনুল হক (৭০), বাচ্চু মিয়া (৭০), বেলাল (৬০) ও তাজুল ইসলাম (৬৫ )। আমিনুল হক ও বাচ্চু মিয়ার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামে। আর বেলালের বাড়ি ঢাকার দক্ষিণখানের বেড়াইদ এলাকায়। তার পিতার নাম আঃ সামাদ। তাজুল ইসলামের বাড়ি বগুড়ায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোর সাড়ে ৩টার দিকে সাদপন্থীরা তুরাগ নদীর পশ্চিম তীর থেকে কামার পাড়া ব্রীজসহ বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করতে থাকেন। এসময় ময়দানের পাহারায় থাকা যোবায়েরপন্থীরা ভেতর থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে বলে সাদপন্থীরা জানান। সাদপন্থীরাও পাল্টা হামলা চালায়। এক পর্যায়ে সাদপন্থীরা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।
সাদপন্থী মিডিয়া সমন্বয়ক মুরুব্বী মোহাম্মদ সায়েম বলেছেন, আমরা এখন ইজতেমা ময়দানের নিয়ন্ত্রণে আছি। যোবায়েরপন্থীদের আক্রমণে আমাদের এক ভাই শহীদ হয়েছেন। টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার মোস্তাফিজ জানান, হাসপাতালে আমিনুল হক নামের এক মুসল্লির মরদেহ রয়েছে। অনেকে আহত হয়েছেন। যোবায়েরপন্থী মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, সাদপন্থীরা শেষ রাতের দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের সাথী ভাইদের উপর আক্রমণ করেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই আমিনুল হক ও বাচ্চু নামের দুজন নিহত হন।
টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের এম্বুলেন্স চালক আশরাফুল ইসলাম জানান, ঢাকায় নেয়ার পথে বেলাল নামে একজন মারা গেছেন। তার বাড়ি ঢাকার বেড়াইদে। এদিকে টঙ্গীর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আজ সকালে বিজিবি জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।