সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

ভোটের কথা বললে অনেকে অসন্তুষ্ট হন : মির্জা ফখরুল

সাইফুর রহমান:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা ছাত্রদের ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে আবার সুযোগ তৈরি করেছেন, যেন আমরা দেশকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তুলতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘ভোটের কথা বললে অনেকে অসন্তুষ্ট হন। আমরা ভোট চাই এই কারণে যাতে আমরা সঠিক লোক নির্বাচন করতে পারি; যিনি সংসদে গিয়ে আমাদের জন্য কাজ করবেন। আমরাও সংস্কার চাই। ২০২২ সালে আমাদের নেতা ৩১ দফা দিয়েছেন।’
গতকাল রবিবার বিকেলে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাকোয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হাসিনা মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। এই দেশে নাকি হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, এই অঞ্চলের মানুষ শান্তিপ্রিয়।
এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে বাস করি। পূজায় এখানে মন্দির পাহারা দিয়েছে আমাদের লোকজন। তারা আমাদের মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে বিপদে ফেলতে চাচ্ছে। আমাদের তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, ‘যারা লুটপাট করে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে। কেউ যেন আমাদের দেশের ওপর অন্যায়ভাবে হাত না দেয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর যে অত্যাচার করেছে তা আর কেউ করেনি। আলেম-ওলামাদের ফাঁসি দিয়েছে, আমাদের রাজনীতিবিদদের ধরে নিয়ে গেছে, জেলে দিয়েছে। এভাবে কেউ যেন আর অন্যায় করতে না পারে সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখন যেন কেউ দেশকে বিভক্ত করতে না পারে। আমরা সবাই এক। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আমরা সবাই বাংলাদেশের উন্নয়ন চাই। এভাবেই আমাদের কাজ করতে হবে। আমি আহ্বান জানাতে চাই সরকারি কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিসহ সকলকে, আসুন আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি, এই সুযোগটা কাজে লাগাই। আবার আমরা সব বিভেদ ভুলে বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে গড়ে তুলি। একটা শান্তির দেশ, প্রেমের দেশ, উন্নতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলি। আমাদের মাথায় যেন কেউ কাঁঠাল ভাঙতে না পারে সেজন্য সজাগ থাকি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই ঘুষ চাচ্ছে, ঘুষ আমরা আর দেব না। আপনারা সবাই রুখে দাঁড়াবেন। যে ঘুষ চাইবে তাকে ধরে পুলিশে দিবেন। আবার পুলিশ ঘুষ খায়, কিন্তু আমরা এই পুলিশ পরিবর্তন করছি। পুলিশ এখন জনগণের পুলিশ হবে। এই রকম একটা বাংলাদেশ আমরা চাচ্ছি। কেউ কেউ বলেন, একাত্তর ভুলে যাবে। একাত্তর আমরা ভুলতে পারি না। একাত্তরে আমাদের একটা স্বাধীন দেশের জন্ম হয়েছে। আমি আমার নিজেকে চিনতে পেরেছি একাত্তর সালে। আমরা আমাদের জন্য একটা ভূখ- তৈরি করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর আমরা একটি ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট দানব সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমরা বারবার জেলে গেছি। এখানেও অনেক মানুষ আছে যারা জেলে গেছে, পালিয়ে ছিলেন, ঘরে থাকতে পারেননি। সারা দেশে একটা ভয়ের রাজত্ব গড়ে তোলা হয়েছিল। ফ্যাসিবাদ হলো যখন একটা সরকার নির্বাচনের নাম করে ক্ষমতায় গিয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে, খুন, গুম করে যেভাবেই হোক সে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। হাসিনা তাই করেছে। মানুষ চায়নি, কিন্তু সে জনগণকে বোকা বানিয়ে জোর করে তিনটি নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় থেকেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘সে (হাসিনা) ভেবেছিল কোনদিন ক্ষমতা ছেড়ে যাবে না। তাকে সেনাবাহিনী দুটি অপশন দিয়েছিল। একটি হলো উত্তাল জনগণের দ্বারা পিষ্ট হবেন, না বাঁচার জন্য পালিয়ে যাবেন? যে নেত্রী বলেছিল আমি মুজিবের বেটি, আমি পালাই না, সে জীবন নিয়ে তার নেতাকর্মীদের ছেড়ে দিয়ে বিপদে ফেলে পালিয়ে গেছে। এই হলো ফ্যাসিবাদের পরিনতি।’
বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের আয়োজনে জনসভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বেবী নাজনীন, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, পঞ্চগড় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু, কেন্দ্রীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরসহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিএনপি মহাসচিব আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৬টি পরিবারের স্বজনদের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com