বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। গত নভেম্বরে নির্ধারিত বৈঠকটি অক্টোবরে মাসে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। বৈঠকটি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যেই শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছরে বিজিবি ও বিএসএফ প্রধানদের বৈঠকটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
বিষয়টির সঙ্গে অবহিত বিএসএফের এক কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, বৈঠকের নতুন তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তাই এই বছরে আর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে না। গত মাসে বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার পর ডিসেম্বরে পারস্পরিক সমঝোতার চেষ্টা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এর আগে চলতি বছরের আগস্টে বাংলাদেশের ক্ষমতা বদলের পর এটাই এই পর্যায়ের প্রথম বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ওই সময় ভারতের সংবাদমাধ্যম পিটিআই জানিয়েছিল, বাংলাদেশের পরিকল্পনায় পরিবর্তনের কারণে বৈঠক স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকার পক্ষ থেকে জানানো হয়, পরবর্তী সময়ে আলোচনার জন্য দ্রুত তারিখ ঠিক করতে কাজ চলছে।
বিএসএফ কর্মকর্তার দাবি, সীমান্তের নির্দিষ্ট পয়েন্টে বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে সমস্যা হয়েছে, তবে এটি সামান্য বিষয়। যেসব বিষয়ের সমাধান সম্ভব হয়নি, সেগুলো দুই বাহিনীর বৈঠকে উত্থাপন করা হবে। সীমান্তে দুই বাহিনীর মধ্যম সারির কর্মকর্তাদের নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। তাই আমরা মনে করি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক কিছুটা পিছিয়ে গেলেও তা কোনও সমস্যা নয়। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফকে মোটরবোট চালাতে সাহায্য করা কয়েকজন অসামরিক ব্যক্তি ভুলবশত বাংলাদেশ ভূখ-ে ঢুকে পড়েছিলেন। সেই ঘটনায় ৫ ভারতীয়কে সশস্ত্র অপরাধী হিসেবে গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশে। এই নিয়ে দুই পক্ষের অচলাবস্থা কাটেনি। এদিকে সীমান্তের কয়েকটি পয়েন্টে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণেও আপত্তি জানায় বিজিবি সদস্যরা। সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন বরাবরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে ঢাকায় দুই বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে প্রতিবেশী দুই দেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদকবিরোধী বিভাগ, কাস্টমস ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সম্পর্কিত রাষ্ট্রীয় সংস্থার কর্মকর্তারাও অংশ নেন। কবে এ বৈঠকটি হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ২৯
সেন্টমার্টিনে সাগরে বিকল পর্যটকবাহী জাহাজ উদ্ধার
(বাসস): সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার পথে কক্সবাজারে টেকনাফের বাহারছড়া উপকূলবর্তী সাগরে পর্যটকবাহী জাহাজ ইঞ্জিন বিকল হয়ে আটকা পড়েছে। খবর পেয়ে ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডসহ স্থানীয় জেলেদের সহায়তায় আটকা পড়া পর্যটকদের উদ্ধার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া উপকূলবর্তী সাগরে জাহাজটি আটকা পড়ে বলে জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ মো. আবুল কালাম। আটকা পড়া জাহাজটিতে অন্তত ৭১ জন পর্যটক ছিল বলে জানান তিনি। জাহাজটির সংশ্লিষ্টদের বরাতে আবুল কালাম বলেন, সকালে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়াস্থ বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাট থেকে এমভি গ্রীণলাইন নামের পর্যটকবাহী জাহাজটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। দুপুরের আগে জাহাজটি সেখানে পৌঁছায়। পরে বিকেল ৪টার দিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের জেটি ঘাট থেকে জাহাজটি ৭১ জন যাত্রী নিয়ে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা করে। ফেরার পথে রাত ৮টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের কচ্ছপিয়া উপকূলবর্তী সাগরে পৌঁছালে আকস্মিক ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এতে জাহাজটি সেখানে আটকা পড়ে। ট্যুরিস্ট পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এ সময় জাহাজটি ক্রুসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় কোস্টগার্ড স্টেশনকে অবহিত করে। পরে প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত ৯টার দিকে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ নৌবাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও স্থানীয়দের সহায়তায় পর্যটকদের উদ্ধার করে। এসময় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। টেকনাফের ইউএনও শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ, নৌবাহিনী, বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা উপস্থিত আছেন। জাহাজটি যেহেতু উপকূলে ভিড়েছে জোয়ারের পানি কমে যাওয়ার পর তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে।