বর্তমানে যুবসমাজের চারিত্রিক অধঃপতন ঘটছে। তারা নানা ধরনের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ সাংস্কৃতিক আগ্রাসন। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার হয়ে যুবসমাজের চিন্তা, চেতনা ও মননে বিদেশী সংস্কৃতি প্রভাব স্থান করে নিচ্ছে। তারা অন্ধভাবে বিদেশী তারকাদের অনুকরণের চেষ্টা করছে। অঞ্চল, সামাজিকতা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় কারণে বিদেশীদের সাথে আমাদের যে ভিন্নতা থাকার কথা তা আজ আমাদের মধ্যে নেই। তা ছাড়া বিদেশী সিনেমায় যে অশ্লীল দৃশ্য দেখানো হয় সেটা যুবসমাজের লজ্জা-শরমকে বিনষ্ট করছে। তাদের নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মনের মধ্যে পশুত্বকে জাগিয়ে তুলছে।
এই অধঃপতন থেকে যুবসমাজকে সুপথে ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে ইসলামী সাহিত্য। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে লেখকের চিন্তা, চেতনা, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার লিখিত রূপই হচ্ছে ইসলামী সাহিত্য। যেমন- আন্দালুসের ইতিহাস, আফ্রিকি দুলহান, আঁধার রাতের মুসাফির, বেলা ফুরাবার আগে, মা, মা, মা এবং বাবা, ঈমানদীপ্ত দাস্তান ইত্যাদি।
ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নের মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া যায়। পাওয়া যায় নির্মল আনন্দ। তাছাড়া বিতৃষ্ণ মনে সতেজতা আনয়ন ও ভালো কাজে মনকে স্থির রাখার জন্য ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন খুবই জরুরি। ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নের মাধ্যমে সোনালি যুগের ইতিহাস মনোজগতে ভেসে বেড়াবে। ধর্মীয় মূল্যবোধের পূর্ণ বিকাশ ঘটবে। নীতি-নৈতিকতা সুদৃঢ় হবে। ফলে সৎ কাজের প্রতি আগ্রহ জাগ্রত হবে এবং অসৎ কাজে আসবে অনাগ্রহ।
সাংস্কৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যে নিজেকে সংযত রাখা ও অশালীন কাজ থেকে বিরত থাকার অদম্য ইচ্ছে জাগ্রত করার জন্য মুসলিম মনীষীদের জীবনী অধ্যয়নও খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যারা মুসলিম মনীষীদের জীবনী অধ্যয়ন করবে তারা মানব কল্যাণে মুসলিম মনীষীদের ত্যাগ তিতিক্ষা, ইলম অর্জনের তীব্র আগ্রহ, অপরাধ থেকে বেঁচে থাকার অদম্য প্রচেষ্টা, ঈমানের অগ্নিপরীক্ষায় ঠিকে থাকার জন্য সীমাহীন ধৈর্যের কথা জানতে পারবে। তাদের চিন্তা-চেতনায় মুসলিম ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিরাজ করবে। মনে সৎ কাজে উৎসাহ ও অসৎ কাজে অনাগ্রহ জাগ্রত হবে। তাদের মতো আলেম ও মুত্তাকি হওয়ার চেষ্টা করবে। অশ্লীল ও অশালীন দৃশ্য দেখা থেকে বিরত রাখবে। তাই কিশোর-কিশোরীরা, যুবক-যুবতীদেরসহ সবার উচিত মুসলিম মনীষীদের জীবনী অধ্যয়ন করা। চিন্তা-চেতনায় ধর্মীয় মূল্যবোধ লালন করা। তাহলে সমাজে নীতি-নৈতিকতা সুদৃঢ় হবে। ধর্ষণের মতো অপকর্ম বন্ধ হবে। লেখক : শিক্ষার্থী ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা