ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় বিদেশি সবজি স্কোয়াশ চাষ করে সাফল্যের হাসি হাসছেন ৯ জন প্রান্তিক সবজি চাষী । উপজেলা কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় শীতকালীন সবজির পাশাপাশি জমিতে স্কোয়াশ চাষ করে তারা বেশ লাভবান হয়েছেন। এসব সবজি চাষীরা হলেন, উপজেলার বারপা গ্রামের রুবেল হোসেন, তত্তিপুর গ্রামের মনিরুল ইসলাম, তিল্লা গ্রামের রিতা রানী,ডুমুরতলা গ্রামের মশিয়ার রহমান, নরেন্দ্রপুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম, ছোট ঘি ঘাটি গ্রামের ওহিদুল ইসলাম,কামাল হাট গ্রামের কামরুজ্জামান, মান্দারবাড়িয়া গ্রামের রেজাউল ইসলাম এবং খামারমুন্দিয়া গ্রামের মেহেদী হাসান।সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ডুমুরতলা গ্রামের নওশের আলীর ছেলে সবজি চাষী মশিয়ার রহমান তার ১০ শতক জমিতে নভেম্বর মাসের শেষের দিকে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ এর চারা রোপন করেন। উপজেলা কৃষি দপ্তরের পরামর্শ ও সহযোগিতায় স্কোয়াশের বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর নিজের ১০ শতক জমিতে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে রোপণ করেন চারা। প্রায় দেড় মাস পর গাছে ফল আসতে শুরু করে। বিদেশি স্কোয়াশ গাছ একদম মিষ্টি কুমড়ার মতো। পাতা, ডগা, কা- দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি মিষ্টিকুমড়া নাকি স্কোয়াশ গাছ। প্রতিটি স্কোয়াশ বাজারে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হওয়ায় ভালো লাভ হয়েছে বলেও জানান এই কৃষক । মাত্র ৩ হাজার টাকা খরচে শুরু থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ২০ হাজার টাকার স্কোয়াশ বিক্রি করেছেন স্থানীয় বাজারে ।তিনি আশা প্রকাশ করেন, স্কোয়াশ চাষে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে তিনি আরও বেশি জমিতে এ সবজি চাষ করবেন। তার ক্ষেতের প্রতিটি স্কোয়াশ ওজনে দেড় থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত হয়েছে। সবজি হিসেবে এই এলাকায় স্কোয়াশ নতুন হওয়ায় এর চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে ও স্কোয়াশ ক্ষেত দেখতে আশপাশের স্থানীয় চাষীরা প্রায়ই আসেন। পাশাপাশি তার স্কোয়াশ চাষে এলাকার সাধারণ কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়েছে।স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা শসা আকৃতির এই সবজি লম্বা হলেও রঙ মিষ্টিকুমড়ার মতো। শীতকালীন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্নার উপযোগী। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, আমাদের পরামর্শে উপজেলার ৯ জন কৃষক প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে স্কোয়াশ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কৃষককে বিনামূল্যে বীজ, সার, জৈব বালাইনাশক প্রদান করা হয়েছে। কৃষক যাতে এই ফসল চাষে কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হয়, তাই সার্বক্ষণিক তাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেন আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান । উচ্চমূল্যের নিরাপদ সবজি স্কোয়াশ, কম খরচ ও কম সময়ে এই সবজি চাষ করে চাষী লাভবান হচ্ছে বলে আগামীতে উপজেলায় স্কোয়াশ চাষের প্রসার ঘটবে বলেও এই কর্মকর্তা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।