দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে দ্বিতীয় ধাপে ২০ জন অসচ্ছল নারীর হাতে বিনামুল্যে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়েছে। সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে নারীরা এখন নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছেন। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবাহানের মানবিক উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় সারা দেশে দরিদ্র, বিধবা এবং কর্মহীন নারীদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে বিনামুল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষে সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। গতকাল বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে অসচ্ছল নারীদের হাতে এই সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়। বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ডঃ মাসুদুল হকের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে এলাহি, বীরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল গফুর, বীরগঞ্জ পৌর বিএনপি’র সভাপতি আমিরুল বাহার, বীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলু, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দিনাজপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি রাশেদুন্নবী বাবু, উপজেলা জামায়াতে আমির ক্বারী আজিজুর রহমান ও বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন গনমাধ্যমকর্মী এবং বসুন্ধরা শুভসংঘের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা শাখার বন্ধুরা। এসময় বক্তারা বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগ শুধু অসচ্ছল নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতেই নয়। তাদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি সমাজের খেটে খাওয়া অবহেলিত নারীদের স্বাবলম্বী করার এই উদ্যোগ ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক। তারা আরও বলেন, দেশের অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানেরও উচিত বসুন্ধরার এই মানবিক কাজ থেকে শিক্ষা নিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাড়াঁনো। তাদের এই মানবিক এবং সামাজিক কাজগুলো প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ুক এই প্রত্যাশাই করি। সেলাই মেশিন পেয়ে সাথী বেসরা(১৫) বলেন, আমাদের মাথা গোঁজার কোনো জায়গা ছিল না। বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারে নেমে আসে অন্ধকার। তখন আমি বসুন্ধরা গ্রুপের বিনামুল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ নিই। আজ সেলাই মেশিন পেয়ে নিজে কিছু করার শক্তি পেয়েছি। এ আয় দিয়ে পরিবারের কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে পারব। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার জীবনে আর্শীবাদ হয়ে এসেছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আরেক সুবিধাভোগী আঁখী আক্তার(২১) বলেন, আমার স্বামী ট্রাক চালক, তবে সংসারের কোনো খোঁজখবর রাখেনা। তার এই বেপরোয়া অবস্থার মধ্যে সন্তাানদের মানুষ করতে আমি এই সেলাই মেশিন পেয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। এই আয় দিয়ে সন্তানদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারবো। যারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুণ। বসুন্ধরা শুভসংঘ পরিচালক জাকারিয়া জামান বলেন, পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। এই প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন শুধু আয়ের পথ তৈরি করছেনা। তাদের জীবনে নতুন আলোর দিশাও দেখাচ্ছে। বসুন্ধরা গ্রুপ সবসময় সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। বসুন্ধরা শুভসংঘের এই উদ্যোগ গ্রামীণ নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।