টঙ্গীর তুরাগ তীরে দাওয়াতে তাবলীগের শীর্ষ মুরব্বিদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান ও মুসল্লিদের নফল নামাজ, তাসবিহ-তাহলিল এবং জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত হয়েছে। আজ রোববার ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার সুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারীদের) প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের আখেরী মোনাজাত। আজ রোববার ইজতেমার মোনাজাতের আগে ফজরের পর বয়ান করবেন মাওলানা আব্দুর রহমান সাহেব। আখেরি মোনাজাতের পূর্বে নসিহতমূলক বক্তব্য দিবেন মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। কাঙ্খিত আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইল জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব হাফেজ মাওলানা জোবায়ের আহমেদ। শনিবার সকালেই টঙ্গী শহর এবং ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশের এলাকা যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। গতকাল শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত টঙ্গী অভিমুখী বাস, ট্রাক, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন যানবাহনে ছিল টুপি পাঞ্জাবি পরিহিত মানুষের ভিড়। আজ রোববার আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মানুষের এ স্রোত অব্যাহত থাকবে। ধুলা, ময়লা, শীত, নানা প্রতিকূলতা উপক্ষো করে সবারই মনোযোগ আলেমদের বয়ানের দিকে। গত তিনদিনই ফজরের নামাজের পর থেকে রাত পর্যন্ত থেমে থেমে চলছে বিভিন্ন ভাষায় বয়ান। দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট আলেমগণ বিভিন্ন বিষয়ের উপর বয়ান করছেন। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনোনিবেশ করে ঈমান, আখলাক ও দ্বীনের বিভিন্ন বয়ান শুনেন। প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিন শনিবার বাদ ফজর থেকে তুরাগ তীরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে লাখ-লাখ মুসল্লির উদ্দেশে এভাবে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বয়ান। সবমিলিয়ে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষ্যে শিল্পনগরী টঙ্গী এখন ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। জিএমপি কমিশনার ড, নাজমুল করিম খান শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে স্থাপিত বিদেশি মেহমানদের জন্য তৈরি করা গাজীপুর মহানগর পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সামনে সাংবাদিকদের জানান, আগামীকাল রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার সুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারীদের) প্রথম পর্বের প্রথম ধাপের আখেরী মোনাজাত। সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। শনিবার রাত ১২টা থেকে টঙ্গী-কামারপাড়া রোড, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস পর্যন্ত এবং আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ময়মনসিংহ ও গাজীপুরগামী যানবাহনগুলোকে গাবতলী দিয়ে কোনাবাড়ী হয়ে এবং
ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগড়া বাইপাস দিয়ে ৩০০ ফিট রাস্তা ব্যবহার করে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এ সময় এসব সড়ক হয়ে কোনো পণ্যবাহী গাড়ি বা যান চলতে দেওয়া হবে না। তবে ইজতেমা সংশ্লিষ্ট সব ধরনের যান চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। তিনি বলেন, ইজতেমার মুরব্বিদের সাথে কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, কাল রবিবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে আখেরি মোনাজাত করবেন। কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে সেদিকে আমাদের নজর আছে। আশা রাখি কোন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে না। তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের শীর্ষ মুরব্বি, কাকরাইল জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা তিনি বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থা নতুন করে সাজানো হয়েছে। ভোগড়া বাইপাস থেকে ইজতেমামুখী সাধারণ কোনো গাড়ি চলবে না, সাধারণ যানবাহন ভোগড়া বাইপাস দিয়ে মীরের বাজারের দিকে চলে যাবে। টঙ্গীর দিকে কেবল মুসল্লিদের গাড়ি আসতে পারবে। মীরের বাজার পর্যন্ত গাড়ি বন্ধ থাকবে, মুসল্লিদের গাড়ি ছাড়া অন্য কারো গাড়ি আসতে পারবে না। ঢাকার ভেতরে কুড়িল বিশ্বরোড থেকে তিনশ ফিটের দিকে যাবে। আশুলিয়া সড়কের গাড়ি মিরপুর বেড়িবাঁধের দিকে ডাইভার্ট করে দেওয়া হবে। আগামী তিন ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে সুরায়ে নেজামের (জুবায়ের অনুসারী) দ্বিতীয় পর্ব। ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাদের ইজতেমা। আগামী ১৪ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদ কান্দলভী অনুসারীদের ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে।