দেওয়ানগঞ্জ দুর্গম চরাঞ্চল আমখাওয়া ইউপির বয়ড়াপাড়া গ্রামে স্থানীয় মাতবররা সাত সন্তানের জনক ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে ১১ বছরের কিশোরীর বিয়ে দিয়েছেন।স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় মহিলা মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর সঙ্গে সুরমান আলীর বখাটে ছেলে শাহিনের শারীরিক সম্পর্ক হয়। এতে ওই শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হয়। ১০-১২ দিন আগে কবিরাজি চিকিৎসায় গর্ভপাত ঘটানো হয়।বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহে এ নিয়ে ইউপি সদস্য ও স্থানীয় মাতবররা এ বিষয়ে সালিশ বৈঠক করেন। সালিশে নাতির কুকর্মের দায় চাপিয়ে দেয়া হয় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ দাদার ওপর। শেষে বৃদ্ধের সঙ্গেই ওই ছাত্রীর বিয়ে দেয়া হয়।৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিন ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না, চোখেও ঝাপসা দেখেন। তিনি সাত সন্তানের বাবা। দুই স্ত্রী মারা গেছেন। তৃতীয় বিয়েটি করেছেন ২৭ বছর আগে। বৃদ্ধাকে জিজ্ঞাসা করা হয় চতুর্থ বিয়ে কী কারণে করলেন? বৃদ্ধা মহির উদ্দিনের বলেন, ‘আমার একটা দোষ বর্তাইয়া বিয়া করাইছে গফুর মাস্টার, কদ্দুছ মাস্টার, নাদু মেম্বারসহ কয়েকজন। আসলে আমি নির্দোষ।’ এ সময় দাঁড়িয়ে থাকা বৃদ্ধের মেয়ে আবেদা খাতুন বলেন, মেয়েটির গর্ভপাত বড়ি খাইয়ে নষ্ট করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক মাদরাসা শিক্ষক বলেন, ছেলের ঘরের নাতি দোষ করেছে, এর দায়ভার জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ওই বৃদ্ধের ওপর চাপিয়ে কিশোরীকে বিয়ে দেয়া হয়।চর আমখাওয়া ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদীন নাদু বলেন, মুরব্বিদের নিয়ে সালিশ করা হয়। সালিশে অনৈতিক কাজ করায় বৃদ্ধকে ১০ দোররা এবং শাহিনকে ১০টি দোররা মেরে শরিয়ত মতে বিয়ে হয়। তবে তার ছেলে ঘরের নাতি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। এ ঘটনার জন্য বৃদ্ধই দায়ী।চর আমখাওয়া ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আকন্দ জানান, এটা আশ্চর্য ও ন্যক্কারজনক ঘটনা। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি এমএম মইনুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমার জানা নেই।