বান্দরবানের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক-নার্স ও জনবল সংকট সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষের একমাত্র ভরসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক আছেন মাত্র দুইজন। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সল্প সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্সরা। রোগীর তুলনায় চিকিৎসক,নার্স ও ক্লিনারের পরিমাণ কম হওয়ায় হাসপাতালটির চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক সংকটে দুজন ডাক্তার রোগীর চাপে হাঁপিয়ে উঠেছেন। তাদের পক্ষে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যারা কর্মরত আছেন তারাও নিয়মিত কর্মস্থলে থাকছেনা। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে ২ জন মেডিকেল অফিসার,১১ জন জুনিয়র কনসালটেন্ট,১ জন আবাসিক মেডিকেল অফিসার, সহকারি সার্জন ৭ জন,ডেন্টাল সার্জন ১জন সহ মোট চিকিৎসকের পদ রয়েছে ২২টি। এর বিপরীতে চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র তিন জন। ৩২ জন নার্সের পদে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭ জন। চিকিৎসক ও নার্স সংকটের কারণে হাসপাতালটি থেকে বিমুখ হয়ে পড়ছে মানুষ। শনিবার (১ মার্চ) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,কয়েক লাখ জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোর,ইনডোরও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন মাত্র একজন চিকিৎসক। এতে পর্যাপ্ত সংক্ষক রোগীর সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। চিকিৎসকের অভাবে অনেককে সেবা না নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে অন্যত্র। স্থানীয়রা জানান,সার্জারি বিভাগে চিকিৎসক না থাকায় এ হাসপাতালে দীর্ঘদিন যাবৎ অস্ত্রোপচার হয় না। অপারেশন না হওয়ায় জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া) ডাঃ নুর মোহাম্মদ হাসপাতালে আসেন না। জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে দাপ্তরিক কাজের জন্য সবসময় ব্যস্ত থাকতে হয়। এ অবস্থায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টাল সার্জন সহ দুজন দিয়ে আউটডোর,ইনডোর ও জরুরি বিভাগ পরিচালনা করা কষ্টকর। এদিকে জনবল সঙ্কট ও অসচেতনার কারণে নষ্ট এবং অকেজু হয়ে পড়ে আছে ২টি এ্যাম্বুলেন্স ইসিজি,আল্ট্রাসনোলজি,ডেন্টাল ও চক্ষু নির্ণয়ের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং অত্যাধুনিক মানের এক্স-রে মেশিন দুইটি সহ চিকিৎসার যাবতীয় যন্ত্রপাতি। এ কারণে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হওয়ায় ন্যায্য চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ উপজেলার হত দরিদ্র মানুষ গুলো। লামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এখিং মারমা জানান,৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে প্রতিদিন সেবা নেন ৩০০-৩৫০ জন রোগী। অন্যদিকে রোগী ভর্তী থাকে ৬০ জনের উপরে। এই মুহূর্তে আমাদের মারাতœক জনবল- সংকট চলছে। প্রতিটা সেক্টরেই চিকিৎসক সল্পতা। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে বলেছি। আশা করছি দ্রুত সময়ে চিকিৎসক সংকটের বিষয়টি সমাধান হবে।