বগুড়ার শেরপুরে হটাৎ করেই প্রাথমিক বিদ্যালয় উধাও হয়ে অন্যত্র স্থাপন করে শুরু হয়েছে পাঠদান, পুরনো জায়গায় চলছে মাটি ভরাটের কাজ, অথচ জানেন না শেরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এমনকি স্কুলের জায়গা সঠিক রয়েছে এ ব্যাপারে লিখিত চাইলেও প্রধান শিক্ষক লিখিত দেননি বলে জানান শেরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান। বিষয়টি জানার পর তিনি সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে যাবার পরেও মাটি ভড়াটের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করে অনত্র স্থাপন করে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং স্থানীয় গ্রামবাসী মাটি ভড়াট করছে কিন্তু তারা এটা ব্যাবহার করবে না বলে জানান ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরেশ চন্দ্র সরকার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, বিগত ২০০৪ সালে শেরপুর উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের রনবীরবালা গ্রামে রনবীরবালা বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। ২০০৬ সালে পরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঢাকা বরাবরে জনৈক ব্যক্তি ১৫ শতকসহ মোট ৩৩ শতক জমি বিদ্যালয়ের নামে দেন। কিন্তু গত ৩ মাস আগে হটাৎ করেই গ্রামের কিছু লোকেরা স্কুলটি সরিয়ে উত্তর থেকে রাস্তার দক্ষিণ পার্শে টিনের বেড়া দিয়ে বিদ্যালয়টি নতুন করে স্থাপন করে। কিন্তু যেখানে আগে বিদ্যালয় স্থাপন করা ছিল সেখানে কিছু ব্যক্তি মাটি ভড়াটের কাজ করছে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসার পর শেরপুর উপজেলা সরকারি কমিশনার (ভুমি) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপস্থিত হয়ে তদন্ত করে। কিন্তু এর পরেও বিদ্যালয়ের নামে থাকা ওই জায়গায় মাটি ভড়াটের কাজ চলছে। বিদ্যালয়ের স্থানান্তর নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ বলছেন, এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো, আবার কেউ দাবি করছেন ব্যবসায়িক স্বার্থে জায়গাটি দখল করা হয়েছে। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, বিদ্যালয়টি পূর্বের অবস্থানে থাকলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হতো। বিদ্যালয়ের আগের জায়গাটি যদি দখল হয়ে যায়, তবে এটি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। তারা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুততম সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার পরিবেশ সুরক্ষিত রাখবে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরেশ চন্দ্র সরকার জানান, বিদ্যালয়টি অনত্র সরানো হয়েছে আর স্কুল উন্নয়নের জন্য ভরাট করা হয়েছে। স্কুলের পুরো জায়গা সরকারের দখলে আছে। শিক্ষা অফিসারের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন এসে তদন্ত করে গেছে। প্রতিষ্ঠানটি সরকারী করণ না হওয়ায় গুরুত্ব পায়নি। আমরা সরকারি করণের জন্য আবেদন করেছি। যারা মাটি ভড়াট করছে তারা এটি ব্যাবহার করবে না স্কুলকে দেবে। স্কুল স্থনান্তরের বিয়য়ে তিনি বলেন, এটি অন্যত্র সরিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, পুর্বের জায়গায় মাটি ভরাট চলছে, কিন্তু তারা এটা ব্যাবহার করবে না। আর বর্তমানে কোন কমিটি নেই, নতুন করে গঠন করতে হবে। স্থানীয় ফরিদুল, পাইকার সমিতির সদস্য আব্দুল কুদ্দুস ও মুন্নু জানান, বাচ্চাদের যাতয়াতের সমস্যার কারনে স্কুল উত্তর থেকে দক্ষিণ পাশে নেওয়া হয়েছে।
আগে স্কুল ছিল ১৫ শতকের উপর এখন ২১ শতকের উপর রয়েছে। এসিল্যান্ড সাহেব এখানে এসেছিল তিনি বলেছেন, যেহেতু সামনে সরকারি জায়গা, পেছনে যদি কারও কেনা সম্পত্তি থেকে থাকে তাহলে আপনারা কাগজপত্র নিয়ে আসেন আমরা স্বচোখে দেখি। আমরা কাজজপত্র নিয়ে গিয়েছিলাম তিনি বলল, জায়গা ১৫ শতক আছে মহাপরিচালক বরাবরে। আমরা বলেছি বাচ্চাদের স্কুলে যাতয়াতের সমস্যার কারনে অনত্র সরিয়েছি। স্কুলের ওই জায়গায় মাছের আড়ৎ করে যে টাকা হবে ওই টাকা দিয়ে স্কুলের উন্নয়ন হবে। তাছাড়া প্রশাসন এসে স্কুল দেখে গেছে। গণি সাহেবের বাবা স্কুলের জায়গা দিয়েছে সেখানে আমরা স্থানান্তর করেছি। শেরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল হাসান জানান, যদি কেউ স্কুলের জায়গায় ঘর তুলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুই দলিল মিলে ৩৩ শতক জমি মহাপরিচালক বরাবরে দেওয়া আছে দাতা ১জন। সরেজমিনে তদন্তে গিয়েছিলাম, আমরা প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি লিখিত চেয়েছিলাম যে স্কুলের জায়গা সঠিক আছে তিনি তাও দেয়নি। আমাদের সাথে ভাল আচরণ করেননি। যেহেতু ওই সম্পত্তি মহাপরিচালক বরাবরে দিয়েছে আমরা ছাড়ব না। শুনেছি ওই জায়গা দখল করার জন্য কিছ লোক ঘুরছে। স্কুল উধাও এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুল কবে সরিয়ে অনত্র স্থাপন করেছে এবং ওই স্থানে মাটি ভরাট করছে আমাকে কেউ বলেনি বা অনুমতি নেয়নি। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভুমি) এস.এম রেজাউল করিম জানান, ভরাট করার বিষয়টি জানানেই। আইন মোতাবেক দলিল মুলে জমির মালিক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। যদি কেহ দখল করে বা চেষ্টা করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে ব্যবস্থা নেব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক খান জানান, ওই সম্পত্তি দেখাশোনা করবেন প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। তার কাছেই সমস্থ তথ্য আছে। বিদ্যালয়ের জায়গা দখল বা মাটি ভরাট করছে অন্যত্র সরিয়েছে এটা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেখবেন। যদি আমাদের বলে তাহলে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমরা ব্যবস্থা নেব।