চলতি বছর পহেলা বৈশাখের সময় জাটকা অবস্থায় থাকার কারণে এ সময় ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
গতকাল সোমবার সচিবালয়ে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ- ২০২৫’ উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন এসব কথা জানান উপদেষ্টা। এ সময় জাটকা ও মা ইলিশ সংরক্ষণে অন্তর্বর্তী সরকারের নানা পদক্ষেপ তুলে ধরেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে এ বছর প্রাথমিকভাবে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১১ হাজার টন ইলিশ রফতানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘ইলিশের জাটকা যেন নিরাপদে বাড়তে পারে, সেজন্য ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত আট মাস দেশব্যাপী জাটকা ধরা, পরিবহন, মজুদ ও ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।’
ইলিশ সম্পদ রক্ষা ও উন্নয়নে জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার সচেতনতামূলক প্রচারসহ নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল ব্যবহার। এসব জালের ব্যবহার বন্ধে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে বিশেষ চিরুনি তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ সময় পহেলা বৈশাখে পান্থা ইলিশে না খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘পহেলা বৈশাখে যে ইলিশ থাকবে, সেটি জাটকা ইলিশ হিসেবে গণ্য হবে। এটি না খাওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।‘
এই উদ্যোগের আওতায় প্রতি বছর জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উদযাপনের বিষয়টি উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, ইলিশের বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় নির্ধারণ করে মা ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধ সময় ২২ দিন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশের ইলিশসমৃদ্ধ প্রধান প্রধান নদ-নদীতে ছয়টি ইলিশ অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে। এসব অভয়াশ্রমে বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ইলিশসহ সব প্রকার মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘মা ইলিশ এবং জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালে জেলেদের জীবনধারণের জন্য প্রতিবছর ভিজিএফ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নানা চাহিদামাফিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’ ইলিশসহ উপকূলীয় অন্যান্য মৎস্য প্রজাতি ও জলজ জীব রক্ষায় ২০১৯ সালে নিঝুম দ্বীপ ও আশপাশের তিন হাজার ১৮৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা (এমপিএ)‘ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা।
ফরিদা আখতার বলেন, ‘সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা-২০২৩ এর ৩(১) বিধি অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রতি বছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব ধরনের মাছ ও ক্রাস্টাশিয়ান্স (কাঁকড়া, চিংড়ি ইত্যাদি) নিষিদ্ধ থাকে। এতে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণ ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বেড়েছে বলে সরকারি তথ্যে জানা গেছে।