রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

শ্যামনগরে সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন

এবিএম কাইয়ুম রাজ শ্যামনগর
  • আপডেট সময় সোমবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৫

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় সূর্যমুখী চাষে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে। উপজেলার ভূরুলিয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিতে এবার চাষ হয়েছে সূর্যমুখী। বাম্পার ফলনে খুশি কৃষকরা। একদিকে যেমন বাড়তি আয়ের উৎস তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে সৌন্দর্যবর্ধক এই ফসলের কারণে এলাকা পরিণত হয়েছে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে। স্থানীয় কৃষকদের তথ্য মতে, চলতি রবি মৌসুমে ভূরুলিয়া গ্রামে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী আবাদ হয়েছে। ধান কাটার পর পতিত জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করে কৃষকরা ভালো ফলন পাচ্ছেন। তিন হায়ছান-৩৩ জাতের সূর্যমুখী চাষ করে তারা এবার আশাব্যঞ্জক সাফল্যের মুখ দেখেছেন। শ্যামনগরের উপকূলীয় অঞ্চল হওয়ায় এখানকার মাটিতে লবণাক্ততার মাত্রা বেশি। সাধারণত এ ধরনের মাটিতে অনেক ফসল ফলানো কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু সূর্যমুখী লবণাক্ত মাটি সহনশীল হওয়ায় কৃষকদের জন্য এটি হয়ে উঠেছে একটি লাভজনক বিকল্প ফসল। কৃষি বিভাগ জানায়, বিজ্ঞানভিত্তিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই অঞ্চলে সূর্যমুখী চাষে সাফল্য এসেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদার তত্ত্বাবধানে এবং ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহিউদ্দিনের সরাসরি মাঠ পর্যায়ের সহযোগিতায় কৃষকরা সূর্যমুখী চাষে উৎসাহ পেয়েছেন। কৃষকরা জানান, সূর্যমুখীর চাষে খরচ তুলনামূলকভাবে কম এবং ফলন ভালো হওয়ায় তারা আগামী বছর আরও বেশি জমিতে আবাদ করার পরিকল্পনা করছেন। দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। সেই প্রেক্ষাপটে সূর্যমুখী একটি সম্ভাবনাময় তেলজাতীয় ফসল হিসেবে গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে সূর্যমুখী বীজ থেকে তেল উৎপাদনে এখনও কিছু প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ কিছুটা কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবুও কৃষকদের আগ্রহ ও উৎপাদনের সফলতা প্রমাণ করছে যে সামান্য সহযোগিতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেলে সূর্যমুখী চাষ দেশের ভোজ্যতেল উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এদিকে সূর্যমুখী বাগানের অপরূপ সৌন্দর্যে প্রতিদিন বিকেলে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। কেউ ছবি তুলতে, কেউবা প্রকৃতির রঙে স্নিগ্ধ হতে ছুটে আসেন এই মাঠে। সূর্যমুখীর হলুদ ফুলের সমারোহ যেন প্রাণ জাগায় মনেও। কৃষকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মনেও ছড়িয়ে পড়ছে আনন্দ। সাফল্যের এই ধারা অব্যাহত থাকলে শ্যামনগর উপজেলার সূর্যমুখী চাষ শুধু কৃষকের জীবনে পরিবর্তন আনবে না, বরং এটি পর্যটনেরও নতুন দ্বার খুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com