দিনাজপুরের হিলির চারমাথা বকুল তলায় চড়ুই পাখির কলরবে মুখরিত হয়ে উঠছে চারদিকে। পথচারী সহ স্থানীয়রা দাঁড়িয়েই শুনেন এই চড়ুই পাখিদের কিচিরমিচির গল্প আর ঝগড়া। শত শত চড়ুই পাখির কোলাহল দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায় সবার। এমন দৃশ্য হিলি স্থলবন্দরকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। যানবাবহনের শব্দের পাশাপাশি যোগ হয়েছে চড়ুই পাখিদের গুঞ্জন। ভারত থেকে আসা পণ্যবাহী ট্রাক ড্রাইভার ও হেলপার গাড়ি থেকে নেমে উপভোগ করেন এই পাখিদের কন্ঠে কিচিরমিচির গান ও তাদের উশৃংখলতা। গাছের পাশ দিয়ে হেটে গেলে একটু মাথা উচু করলে চোখে পড়ে হাজারও চড়ুই পাখির দল। হিলির চারমাথা রাস্তার কোণঘেঁষে আছে পাঁচটি বকুল ফুলের গাছ। আর গাছের উপরে বসে আছে হাজারও চড়ুই পাখি। ব্যস্ততম শহরের যানবাহনের শব্দের মধ্যেও শোনা যায় এই সব পাখিদের কিচির-মিচিড় শব্দ। চড়ুই পাখিগুলোর বসবাস বিদ্যুতের তারের উপরে কেউবা গাছের ডালে। হাজারো পাখির কিচিড়-মিচিড়ে মুগ্ধ হয়ে উঠেছে পুরো চারমাথার ব্যস্ততম মোড়ে। কথা হয় একজন ভ্যান চালক আমজাদ হোসেনের সাথে, তিনি বলেন, এতোগুলো চড়ুই পাখির একসাথে কিচির-মিচিড় করছে, দৃশ্যটি দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। আমি চারমাথায় ভ্যান নিয়ে আসলে বকুল তলার নিচে বসি শুধু এই পাখিগুলো দেখতে আর তাদের কন্ঠে গান শুনতে। বকুল তলার মদির দোকানী শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর শীত মৌসুমে এই চড়ুই পাখিদের এখানে আগম ঘটে। কোথা থেকে আসে তা বলতে পারি না। বকুলের গাছগুলোতে তারা বাসা বাঁধে। সন্ধ্যা হলেই তাদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠে চারমাথা। প্রতিদিন সন্ধ্যায় বকুল গাছে ডালে পাখির কিচির-মিচির শব্দ জানিয়ে দেয় তাদের উপস্থিতি। সংখ্যায় প্রায় কয়েক হাজারের মতো হবে। চারপাশের বিদ্যুতের তার ও বকুল গাছ গাছের ডালে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বসে তারা। বিকেল থেকে পরের দিন ভোর পর্যন্ত থাকেন এই পাখিগুলো। ভোর হলেই বেড়িয়ে পরে খাবারের উদ্দেশ্যে। আবরও ফিরে আসে বিকেলে। যখন ফিরে আসে তখনি তাদের কিচির-মিচিরে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো এলাকা। হাকিমপুর পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, প্রতি বছর নভেম্বরের শুরুতে পাখিগুলো ঝাঁক বেধে হাজির হয় চারমাথা বকুল তলায়। তাদের এই উপস্থিতে পৌর এলাকাকে আরও সুন্দর করে তুলে। পৌর সভার পক্ষ থেকে প্রতিদিন তাদের দেখভাল করা হয়। তাদের রক্ষানা-বেক্ষনের জন্য পৌর কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া আছে। হাকিমপুর উপজেলার চেয়ারম্যান হারুনউর রশিদ হারন বলেন, চড়ুই পাখিগুলো জনবসতির মধ্যে থাকতে অনেক বেশি ভালোবাসে। যার কারনে এদের বলা হয় স্প্যারো। যেহেতু এই পাখিগুলো জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালোবাসে সেজন্য কেউ যাতে এই পাখিদের মারার চেষ্টা না করেন, এবিষয়ে সকলের নিকট আহবান করা হলো।