প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একইসঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যাও ১৬ লাখ ছুঁয়েছে। ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯৫ হাজার ৫২৬ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিন লাখ ৫৫ হাজার ৪৮০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। এই সময়ে দেশটিতে মারা গেছেন এক হাজার ৭২৪ জন। এরপরই রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, স্পেন ও ইতালি।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় যুক্তরাষ্ট্রে এক হাজার ৭২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫১২ জনে। এদিন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩০ হাজার ৩১৩ জন।
তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ৪ লাখ ৬৫ হাজার ২৪০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। প্রতিদিন এই সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়েছে। ফ্রান্সে এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। অপরদিকে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ২০ হাজার। ইউরোপের এই দেশটি এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় বিশ্বের চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত এক লাখ ১৭ হাজার ৭৪৯ জন প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১২ হাজার ২১০ জন। অপরদিকে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছে ২৩ হাজার ২০৬ জন।
তবে করোনায় আক্রান্ত ৭ হাজার ৬৬ জনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। ফ্রান্সে বুধবার নতুন করে ১৩৪১ জন মারা গেছেন। নতুন আক্রান্ত ৪ হাজার ৭৯৯ জন।
যুক্তরাজ্যে করোনার প্রকোপ প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যুর মিছিলে সামিল হয়েছেন আরও অন্তত ৮৮১ জন। এ নিয়ে সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা প্রায় আট হাজার ছুঁয়েছে। সব মিলিয়ে সেখানে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৯৮৪ জন। যুক্তরাজ্যে এপর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৫ হাজার জনেরও বেশি। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন অন্তত ৩৫১ জন। একদিন আগেই স্পেনে ৭৪৭ জনের প্রাণ কেড়ে নেয় করোনাভাইরাস। তবে বৃহস্পতিবারের হিসাব অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছে ৬৫৫ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িছে ১৫ হাজার ৪৪৭ জন। জার্মানিতে আগের দিনের মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৩৩ জন। তবে আজকের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১৮০ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িছে ২ হাজার ৫২৯ জন।
এদিকে আগের দিনের তুলনায় ইতালিতে মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। একদিন আগে দেশটিতে ৫৪২ জনের মৃত্যু হলেও গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে আরও ৬১০ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িছে ১৮ হাজার ২৭৯ জন।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি করোনায় আক্রান্ত
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ শিকদার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। সাবেক এই প্রোভিসি ও স্কিনবিডি বিভাগের চেয়ারম্যান করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত বলে পরীক্ষার পর আজই নিশ্চিত হয়েছেন। তার আক্রান্তের তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর শহীদুল্লাহ শিকদারের অফিসকে জীবাণুমুক্ত (ডিসইনফেক্টেড) করা হয়েছে। তার সংর্স্পর্শে যারা এসেছিলেন তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আজও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অফিস করেছেন। পজিটিভ হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়ার আগে তিনি তার কলিগদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ফোনে অধ্যাপক শহীদুল্লাহ শিকদারের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি তিনি নিজেই গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন। ফোনে তিনি তার আশুরোগ মুক্তির লক্ষ্যে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। এর আগে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক দুই সপ্তাহ থেকে করোনা আক্রান্ত হয়ে কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সংস্পর্শে যে আটজন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ এসেছিলেন তাদের সবাইকে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার তাদের কোয়ারেন্টিনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। গ্যাস্ট্রো-এন্টারোলজির ওই অধ্যাপকের অবস্থা কয়েক দিন খুবই খারাপ অবস্থা থাকলেও জানা গেছে, আজ তার অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অধ্যাপক শহীদুল্লাহ শিকদার ছাড়াও এ পর্যন্ত দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া দেশব্যাপি ১১ জন চিকিৎসকও আক্রান্ত হয়েছেন। গত বুধবার (৮এপ্রিল) সিলেটের একজন চিকিৎসকের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয় বলে জানা গেছে। এর বাইরে একজন ডিপ্লোমা স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে।