লটারিতে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি : শিক্ষামন্ত্রী
আগামী ২০২১ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক (এসএসসি) ও উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল বুধবার সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০২১ শিক্ষাবর্ষে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দুই মাস পেছাতে পারে। কারণ পরীক্ষার আগে আমরা কমপক্ষে তিন মাস সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে চাই। দীপু মনি আরো বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই ২০২০ সালের এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে। কবে থেকে আবার ক্লাস শুরু হবে, তা নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। যখনই ক্লাস শুরু হবে শুরুর দিকে বেশ কিছু স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে সবাইকে। সেক্ষেত্রে হয়তো সবার সব দিন ক্লাস নাও হতে পারে। তবে এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে জোর দেয়া হবে বেশি। তাদের হয়তো একদিন বাদে বাকি সব দিনই ক্লাস নেয়া হবে।এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহাবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক গোলাম ফারুক, বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।
আগের রোল নম্বরেই নতুন ক্লাসে উঠবে প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা: করোনা পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পিইসি থেকে শুরু করে এইচএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত বাতিল করেছে সরকার। তবে শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিতে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। তেমনিভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবার পরীক্ষা ছাড়াই পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত হবে। এবার যার যে রোল নম্বর আছে, সেই রোল নম্বর নিয়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে। বছর শুরুর আড়াই মাসের ক্লাস ও করোনার সময় যেসব শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতে তাদের মূল্যায়ন করা হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম সোমবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ১৬ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস হয়েছে। সেই সময় তাদের ক্লাস টেস্ট নেয়া হয়েছে, শিক্ষকরা পড়িয়েছেন, এখন সেসব মূল্যায়নে আনা হবে। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির মধ্যে সংসদ টেলিভিশন, বেতার, কমিউনিটি রেডিও এবং জুম প্ল্যাটফর্মে যেসব শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়েছে, সেগুলোও মূল্যায়ন করা হবে। এছাড়া ছুটির মধ্যেও শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়া দিয়ে পড়া আদায় করেছেন জানিয়ে মনসুরুল আলম বলেন, সেসবও তারা মূল্যায়নে আনবেন।
এর বাইরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, যার তথ্য-উপাত্ত শিক্ষকদের কাছে রয়েছে, সেসবও মূল্যায়নে আনা হবে। এসব বিষয় মূল্যায়ন করা হলেও তা পরের শ্রেণিতে ওঠার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান মহাপরিচালক। তিনি বলেন, এবার আনুষ্ঠানিক কোনো পরীক্ষা হচ্ছে না- এটা মাথায় রেখেই মূল্যায়ন করা হবে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের আগের (এবারের) রোল নম্বরই ফলো করবেন, সবাই পরের ক্লাসে প্রমোশন পাবে।
ঢাবি’র ভর্তি পরীক্ষা হবে বিভাগীয় শহরে, মানবণ্টনে ফের পরিবর্তন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ (স্নাতক) ভর্তি পরীক্ষায় নম্বর বণ্টনে ফের পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক জেনারেল অ্যাডমিশন কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভার একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সভা সূত্র জানায়, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ক, খ, গ এবং ঘ এই চারটি ইউনিটে ৪০ নম্বরের এমসিকিউ (বহু নির্বাচনী) এবং ৪০ নম্বরের লিখিত এবং এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ২০ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাবি ভর্তি কমিটি। পাশাপাশি, এবারের ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরগুলোতে অনুষ্ঠিত হবে।
বিগত সময়ের ধারাবাহিকতায় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় ২০০ নম্বর হলেও এবার পূর্ণমাণ থাকছে ১০০। গত ২০ অক্টোবর ডিনস কমিটির এক বৈঠকে পরীক্ষার মানবণ্টনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক থেকে রেজাল্টের উপর ৮০ নম্বরের পরিবর্তে ২০ নম্বর করার সিদ্ধান্ত হয়। আর এমসিকিউ নম্বর ৭৫ থেকে ৩০ এবং লিখিত পরীক্ষার নম্বর ৫০ করা হয়। সবমিলিয়ে ১০০ নম্বরের উপর ভর্তিচ্ছুদের মেধাক্রম তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তবে সোমবার অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির এক বৈঠকে প্রশ্নের মানবণ্টনে ফের পরিবর্তন আনা হয়। সেখানে এমসিকিউতে ৪০ এবং লিখিত পরীক্ষার ৪০ নম্বর করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের স্কোর থেকে ২০ নম্বর নেয়ার বিষয়টি আগের মতোই রাখা হয়েছে।
বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, এবারের ভর্তি পরীক্ষা বিভাগীয় শহরে নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এমসিকিউ, লিখিত এবং এসএসসি ও এইচএসসি ফলাফলের ওপর মোট ১০০ নম্বরের ওপর পরীক্ষা হবে। সময় ও বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন ঠিক করবেন সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনরা। তিনি আরো বলেন, সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির আসন কমানোর বিষয়ে কথা উঠলেও তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানায় সূত্র। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোর সাথে সমন্বয় না করে বছর বছর আসর বাড়ানোর কারণে সমালোচনার মধ্যে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সামনের দিনগুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বৃদ্ধি না করলেও কমানোর কথা ভাবছে না কর্তৃপক্ষ। জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ডিনস কমিটির সিদ্ধান্ত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।