ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন- ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট তালিকায় আছে বাংলাদেশের ৭৮ নাগরিক। তাদের মধ্যে দুই মানবপাচারকারীকে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বছর লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকা-ের পর মানবপাচারকারীদের ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেফতারে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক এই সংস্থা। এর মধ্যে দু’জন গ্রেফতার হয়েছে।বাংলাদেশের যে দুই পলাতক মানবপাচারকারী গ্রেফতার হয়েছেন তারা হলেন: মাদারীপুরের শাহাদাত হোসেন এবং কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল। এই মানবপাচার চক্রের মোট ছয় জনের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি আছে। শাহাদাত হোসেনকে বিমানবন্দর থেকে সিআইডি গ্রেফতার করেছে। আর জাফর ইকবালকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইতালিতে। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের মে মাসে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানবপাচারকারীরা গুলি করে ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করে, সেই মামলায় শাহাদাত ও জাফর আসামি। আরও চার আসামি হলেন বাংলাদেশি মিন্টু মিয়া, স্বপন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তানজিরুল। তাদের ধরিয়ে দিতে গত নভেম্বরে ইন্টারপোল রেড অ্যালার্ট জারি করে। ইন্টারপোলের লাল তালিকায় এখন ৭৮ বাংলাদেশির নাম ও পরিচয় আছে। তাদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত ওই দু’জন মানবপাচারকারীও আছেন। তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের অপরাধের ধরণও বলা আছে। আছে ঠিকানা, বয়স ও ছবি। ৭৮ জনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দ-প্রাপ্ত পলাতকদের নামও আছে। আছে যুদ্ধাপরাধ মামলায় দ-প্রাপ্ত পলাতকদের নাম। বঙ্গবন্ধুর খুনী নূর চৌধুরী, খন্দকার আব্দুর রশীদ, নাজমুল আনসার, শরিফুল হক ডালিম, আহমেদ শরিফুল হোসেন, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরীর নাম আছে। যুদ্ধাপরাধের মামলায় দ-প্রাপ্ত পলাতকদের মধ্যে আবদুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আছে তালিকাতে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় পলাতক মাওলানা তাজউদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি ও বিএনপি নেতা হারিস চৌধুরীর নাম ও ছবিও আছে এই তালিকায়। মানব পাচারকারী, হত্যা মামলায় দ-প্রাপ্ত পলাতক আসামিসহ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসী যারা পলাতক তাদের নামেও রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।
লাল তালিকায় ৭৮ বাংলাদেশি: গত বছর লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যাকা-ের পর মানবপাচারকারীদের ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তারে রেড নোটিশ জারি করেছে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। এর মধ্যে দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ৭৮ নাগরিকের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি আছে। খবর ডয়চে ভেলে
।তবে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচার করে ক্যানাডায় পলাতক পিকে হালদারের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তরে থেকে রেড নোটিশ জারির অনুরোধপত্র পাঠানো হলেও ইন্টারপোলের লাল তালিকায় তা প্রকাশিত হয়নি। একাধিক সূত্র জানায়, সংস্থাটি নিজেরা তথ্য পরীক্ষা করে সন্তুষ্ট হলে তালিকায় কারো নাম অন্তর্ভুক্ত করে। অন্যদিকে কুয়েতে আটক এমপি পাপুলের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
বাংলাদেশের যে দুই পলাতক মানবপাচারকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন তারা হলেন- মাদারীপুরের শাহাদাত হোসেন এবং কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল। এই মানবপাচার চক্রের মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি আছে। শাহাদাত হোসেনকে বিমানবন্দর থেকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। আর জাফর ইকবালকে ইটালিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইতালির পুলিশ ১০ জানুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোকে (এনসিবি) চিঠি দিয়ে প্রেপ্তারের খবর জানিয়েছে। জাফরকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এজন্য সর্বোচ্চ ৪০ দিন সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, গত বছরের মে মাসে লিবিয়ার মিজদাহ শহরে মানবপাচারকারীরা গুলি করে ২৬ জন বাংলাদেশিকে হত্যা করে, সেই মামলায় শাহাদাত ও জাফর আসামি। আরো চার আসামি হলেন বাংলাদেশি মিন্টু মিয়া, স্বপন, নজরুল ইসলাম মোল্লা ও তানজিরুল। তাদের ধরিয়ে দিতে গত নভেম্বরে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করে। সিআইডি’র এএসপি জিসানুল হক বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। ছয়জনের বাইরে আরো জড়িত যাদের নাম আসবে তাদের ধরার জন্যও রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করবো ইন্টারপোলকে। এই ছয়জনের জন্য আমরাই রেড নোটিশ জারির অনুরোধ করেছিলাম।’
তিনি জানান, এর আগে ইন্টারপোলের সহায়তায় দুবাইতে বাংলাদেশি একটি মানবপাচারকারী দলকে আটক করা হয়েছে। কুয়েতেও মানবপাচারকারীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তাদের ব্যাপারেও ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হবে। ইন্টারপোলের সাথে বাংলদেশ পুলিশ ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
এমপি পাপুলের ব্যাপারে কী হবে? এদিকে কুয়েতের কারাগারে গত সাত মাস ধরে আটক আছেন লক্ষ্মীপুরের এমপি শহীদ ইসলাম পাপুল। তার বিরুদ্ধে অর্থ ও মানব পাচারের অভিযোগে বিচার চলছে। ২৮ জানুয়ারি রায় ঘোষণা করা হবে। তার বিরুদ্ধে এখনো বাংলাদেশে কোনো সংসদীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পাপুলকে কুয়েতে আটকের বিষয়টি তাকে কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে (চিঠি দিয়ে) জানায়নি। তাই তিনি ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। যদিও তার আটকের বিষয়টি সংসদে আলোচনা হয়েছে।
পাপুলের বিরুদ্ধে দুদক অর্থ পাচারের মামলা করেছে। তার স্ত্রী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম, মেয়ে ওয়াফা ইসলাম ও শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের বিরুদ্ধেও মামলা করেছে দুদক। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, ‘পাপুল তো কুয়েতে আটক আছেন। তার বিচার চলছে। তাকে আটক করতে আর রেড নোটিশ দরকার নাই। আর কুয়েতের মামলা এবং সাজা যদি হয় তা শেষ হওয়ার পর তাকে দেশে আনার আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
এএসপি জিসানুল হক বলেন, ‘এমপি পাপুল সাহেবের বিরুদ্ধে সিআইডির দায়ের করা মানিলন্ডারিং ও মানব পাচার মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলে পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে সিআইডি কাজ করবে।’
পিকে হালাদার প্রসঙ্গ: লিজিং কোম্পানি দিয়ে জালিয়াতি করে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগের মামলার আসামি পিকে হালদারকে ধরতেও রেড নোটিশ জারির আবেদন করেছে পুলিশ। যদিও নামটি এখনও ইন্টারপোলের বাংলাদেশি ‘ওয়ান্টেড পার্সন’ এর তালিকায় নেই। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম বলেন, ‘আমাদের অনুরোধে পুলিশ সদর দপ্তরতো রেড নোটিশ আবেদন করেছে। এখন কবে তারা নোটিশ জারি করবেন সেটা তো আমরা বলতে পারব না।’
সিআইডির এএসপি বলেন, ‘আমরা অনুরোধ পাঠাবার পর রেড নোটিশ প্রকাশ করতে ইন্টারপোল সময় নেয়। দ-প্রাপ্ত হওয়া না হওয়া তাদের কাছে মুখ্য নয়। তারা যদি তথ্য প্রমাণ দেখে সন্তুষ্ট হয় তাহলে রেড নোটিশ প্রকাশ করে। প্রকাশ করতে কিছু দিন সময় লাগে।’
৭৮ বাংলাদেশি: ইন্টারপোলের লাল তালিকায় এখন ৭৮ বাংলাদেশির নাম ও পরিচয় আছে। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত ওই দুজন মানবপাচারকারীও আছেন। তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের অপরাধের ধরনও বলা আছে। আছে ঠিকানা, বয়স ও ছবি। ৭৮ জনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতকদের নামও আছে। আছে যুদ্ধাপরাধ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতকদের নাম। বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরী, খন্দকার আব্দুর রশীদ, নাজমুল আনসার, শরিফুল হক ডালিম, আহমেদ শরিফুল হোসেন, মোসলেম উদ্দিন, রাশেদ চৌধুরীর নাম আছে। যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতকদের মধ্যে আবদুল জব্বার ইঞ্জিনিয়ার ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আছে তালিকাতে। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় পলাতক মাওলানা তাজউদ্দিন, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি ও বিএনপি নেতা হারিস চৌধুরীর নাম ও ছবিও আছে এই তালিকায়। মানব পাচারকারী, হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিসহ বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে শীর্ষ সন্ত্রাসী যারা পলাতক তাদের নামেও রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে।