ভুট্টা অধিক লাভজনক একটি ফসল জামালপুর জেলার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে শুধুই ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষকরা। কম খরচে অধিক মুনাফা অর্জনের ফলে দিন দিন এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর জেলায় ১১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করার কথা জানালেও উৎপাদনের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়।কৃষিবিদদের দাবি জেলার ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, মেলান্দহ ও সদর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলতি মৌসুমে ব্যাপক আকারে ভুট্টার চাষ করা হয়। অল্প দিনে কম খরচে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় ভুট্টা চাষের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। কম পুঁজি, ঝুঁকিহীন, সেচ ও সার প্রয়োগের সুবিধা থাকায় কৃষকদের মাঝে ভুট্টা চাষের প্রতিযোগিতা চলছে।নলের চরের রসুল মিয়া জানান, পানিতে পাট তলিয়ে নষ্ট হয়েছিলো। ওই জমিতে ধান রোপণ করা সম্ভব হয়নি। তাই আগাম ভুট্টা চাষ করছি। কিছুদিন পরই থোড় বের হবে। দুইবার কীটনাশক দিয়েছি। এখন আর ঝুঁকি নেই। ইসলামপুরের রফিকুল ইসলাম জানান, এর আগের বছর আমি ২ বিঘা জমিতে আবাদ করে ১০০ মন ভুট্টা পাই। প্রতি বিঘাতে খরচ হয়েছিল সাড়ে ৯ হাজার টাকা। আগাম জাতের ভুট্টা তুলে ৮৩০ টাকা মণ বিক্রি করেছিলাম, তবে দেশ লকডাউনের কবলে পড়লে আমাদের কিছু কম দামে ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা মণ বিক্রি করতে হয়। মেলান্দহের চাষী মালেক জানান, সার ও পানি ঠিক মতো দিতে পারলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়। ভুট্টা চাষে কোনো ক্ষতি নেই, পুরোটাই লাভ। সরিষাবাড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভুট্টা চাষে কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেছে। কৃষক অন্য ফসলের চেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ করেছেন। তাছাড়া ভুট্টার পাতা গো-খাদ্যের সংকট দূর করে ডাটা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হওয়ায় কৃষক ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে আবাদ করছেন।জামালপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, গত বছর জেলায় আশানুরূপ ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছ, এ বছরও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগাম জাতের ভুট্টায় গত বছরের অধিক ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।