দেশে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়ার কার্যক্রম বুধবার (২৭ জানুয়ারি) শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। গতকাল শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে তিনি গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আগামী ২৭ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনা টিকা দানের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে বুধবার (২০ জানুয়ারি) একটি সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুল মান্নান বলেছিলেন, প্রথমদিন ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে ২০-২৫ জনকে টিকা দেয়ার মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু করা হবে। প্রথমে টিকা দেয়া হবে একজন নার্সকে। ভারত থেকে শুভেচ্ছা হিসাবে পাঠানো ২০ লাখ ডোজ টিকা গত বৃহস্পতিবার গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি ২৫শে জানুয়ারি ভারত থেকে কেনা ৫০ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসবে।
অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের কোভিশিল্ড নামের টিকাটি ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট তৈরি করছে। বাংলাদেশ সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তিন কোটি ডোজ টিকা কেনার জন্য চুক্তি করেছে।
পরবর্তী কয়েকদিনে ঢাকার চারটি হাসপাতালে পরীক্ষামূলক হিসাবে ৪০০-৫০০ স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা প্রয়োগ করা হবে। এই হাসপাতালগুলো হলো- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল।
টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই, হয়তো একটু গা গরম হবে: ‘করোনা টিকা নিয়ে অনেকে অনেক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছিলো। টিকা পৌঁছে গেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব দূরদর্শী এটা তার প্রমাণ। এখন ক্রমান্বয়ে টিকা দেওয়া হবে। আমরা সবাই নির্ভয়ে করোনা টিকা নেবো। কেউ বিভ্রান্তি ছড়াবেন না। এই টিকার তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। হয়তো একটু গা গরম হবে।’ গতকাল শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজ স্মরণে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, গুজবে কেউ কান দেবেন না। বাকি সময়টা নিরাপদে থাকতে হলে আমাদের করোনা টিকা নিতে হবে। যারা বিভ্রান্তি ছড়াবে তাদের যেন আমরা সঠিকভাবে জবাব দিতে পারি সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভুলে গেলে চলবে না যে ১/১১, ‘৭৫ আর আসবে না। ষড়যন্ত্রকারীরা সবসময় ষড়যন্ত্র করে যাবে। আমাদেরও শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকতে হবে। দলের মধ্যে কেউ শৃঙ্খলা মানবে না এটা হবে না। আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলাবদ্ধ, শক্তিশালী থাকলে যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে আমরা মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবো, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে পারবো।
প্রয়াত এম এ আজিজের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, আমরা গাজী গোলাম মোস্তফা, মুসা সাহেব, হানিফ সাহেব (ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) সবাইকে শ্রদ্ধা জানাব, স্মরণ করব। তাদের ত্যাগের ওপর আজ আমরা দাঁড়িয়ে আছি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আমাকে যে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আমি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সবাইকে নিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাবো। যেভাবে হানিফ চাচা করেছিলেন। তিনি সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন, আবার একই সাথে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বও দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, এম এ আজি একজন সাহসী ও নির্লোভী নেতা ছিলেন। তিনি কখনো চাওয়া-পাওয়ার চিন্তা করেননি। তাকে অনুকরণ, অনুসরণ করে তার থেকে আমরা যেন শিক্ষা নেই।