বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

ঢাকার ভাড়াটিয়াদের পেশা যাচাই করবে পুলিশ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সম্প্রতি ঢাকা মহানগরে গ্রেফতার হয়েছেন এমন কয়েকজন আসামির নাগরিক তথ্যভা-ারে কোনও তথ্য মেলেনি। এমন কয়েকজন পাওয়া গেছে যাদের সিটিজেন ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমসে (সিআইএমএস) পেশাসহ প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যে গরমিল পাওয়া গেছে। এমন প্রেক্ষাপটে চলতি সপ্তাহে আবার শুরু হয়েছে ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ পক্ষ’। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সূত্র বলছে, এবার সিটিজেন ইনফরমেশন দেওয়া তথ্যে বাসিন্দার পেশাও যাচাই করবে পুলিশ। কোনও ব্যক্তি যদি তার ব্যক্তিগত ফর্মে চাকরিজীবী লেখেন, তবে তিনি আদৌ চাকরি করছেন কিনা তা সরেজমিনে যাচাই করা হবে। পুলিশ মনে করছে, সাধারণত অপরাধীরাই তাদের পেশা গোপন করে।
২০১৫ সাল থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় শুরু হয় বিট পুলিশিং প্রথা। অপরাধ ব্যবস্থাপনার জন্য নানাবিধ তথ্য সংগ্রহের অংশ হিসেবে মহানগরে বসবাসরত বাসিন্দাদের তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ২০১৬ সাল থেকে শুরু হয় নাগরিক তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম। তথ্যের বহুবিধ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে প্রস্তুত করা হয় সিআইএমএস। যার যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর।
২০১৯ সালের ১৩ জুন পর্যন্ত সিআইএমএস সফটওয়্যারে বাড়ির মালিক ছিলেন ২ লাখ ৪১ হাজার ৫০৭ জন। ভাড়াটে ১৮ লাখ ২০ হাজার ৯৪, মেসের সদস্য ১ লাখ ২১ হাজার ৪০, অন্যান্য ১ হাজার ১০০ জন। পরিবারের সদস্যসংখ্যা ৩১ লাখ ৬৬ হাজার ৮২১, চালক ও গৃহকর্মী ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৪ জন। মোট ৬২ লাখ ৩৪ হাজার ৫৪৭ জনের তথ্য সংরক্ষিত আছে। এই সিস্টেমে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য একটি ইউনিক ইনডেক্স নম্বরও রয়েছে। ওই নম্বর দিয়ে সিস্টেমে সার্চ দিলে কাক্সিক্ষত নাগরিকের বিস্তারিত তথ্য জানার ব্যবস্থা রয়েছে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, এবারের ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ পক্ষে’ প্রতিটি বিটে নতুন ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। সে ক্ষেত্রে যেসব ভাড়াটিয়া বাসা বদলেছেন, তাদের তথ্য হালনাগাদ করা হবে। বিভিন্ন অপরাধী ও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা বাড়ির মালিককে ভুয়া নাম–ঠিকানা দিয়ে বাসা ভাড়া নিচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে বাড়ির মালিকদের সচেতন করাও এই পক্ষের উদ্দেশ্য। তা ছাড়া প্রতিটি বিটে পেশাদার খুনি, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, চোর, ছিনতাইকারী, মাদক সংক্রান্ত অপরাধী, নারী উত্ত্যক্তকারী, জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নামও হালনাগাদ করা হবে। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) হাফিজ আকতার বলেন, ‘নাগরিক তথ্য সংগ্রহ প্রক্রিয়াটি অপরাধ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাছাড়া কোনও অপরাধ ঘটলে এ তথ্য কাজে লাগিয়েও রহস্য উদঘাটন করার পথ সুগম হয়। আমরা ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়ায় অনেক অপরাধীকে শনাক্ত করতে পেরেছি।’
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনায় অনেক ভাড়াটিয়া পরিবারসহ ঢাকা ছেড়ে যান। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাচেলরদের বাসা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি ডিএমপি কিছু ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। সিআইএমএস-এ তাদের কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানীতে থাকা সব নাগরিককে তথ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার বিট অফিসারদের সহায়তা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।’
তথ্যের গোপনীয়তা থাকবে তো? রাজধানীর ধানমন্ডির চাকরিজীবী মোতালেব হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমি এর আগেও তথ্য দিয়েছি। আমার তথ্য দিতে সমস্যা নেই। তবে ভয় লাগে, এই তথ্য নিয়ে কেউ যদি আমাকেই ফাঁসানোর চেষ্টা করে, তখন কী হবে? কেননা এখন তো সব জায়গায় এনআইডি ব্যবহার করা হচ্ছে। আমি এনআইডি নম্বর, ফোন নম্বর দিয়ে দিচ্ছি মানে আমার সব তথ্যই দিয়ে দিচ্ছি।’ যদি গোপনীয়তা রক্ষার নিশ্চয়তা পুলিশ দিতে পারে, মানুষ নিজে থেকেই তথ্য দিতে আগ্রহী হবে বলে মনে করেন এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে বাসিন্দাদের সকল তথ্য। প্রয়োজন ছাড়া পুলিশও এ তথ্যে হাত দেবে না। পুলিশের কাছে বাসিন্দাদের তথ্য থাকলে অপরাধী সহজে অপরাধ করার সাহস করবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিবন্ধনে ভাড়াটিয়ার সুবিধা: পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মফস্বলের কোনো থানায় কারও নামে মিথ্যা মামলা হলে ঢাকায় অবস্থান করা ব্যক্তি তার নাগরিক তথ্য দিয়ে মামলা মিথ্যা প্রমাণ করতে পারবেন। গভীর রাতে ঢাকায় চলাফেরায় অহেতুক হয়রানি থেকেও রক্ষা পাবেন। পুলিশি কোনও সেবা নিতে চাইলেও সহজে নিজের পরিচয় দিয়ে কাক্সিক্ষত সেবা নেওয়া যাবে। যেভাবে অ্যাপসে নিবন্ধন করবেন: প্রথমে Google Play Store G CIMS DMP লিখে সার্চ করে অ্যাপসটি ইন্সস্টল করতে হবে। তারপর ষড়মরহ অপশনে ফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধনে ক্লিক করতে হবে। এরপর একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে মোবাইল ফোনে। কোড সক্রিয় করে পাসওয়ার্ড সেট করে ষড়মরহ করলে বিভিন্ন ক্যাটাগরি দেখা যাবে।
এখান থেকে নির্দিষ্ট অপশনটিতে ক্লিক করলে একটি ফরম আসবে। ফরমে প্রদত্ত ঘরে সকল তথ্য নির্ভুলভাবে পূরণ করে সাবমিট করলে প্রাথমিক কাজ শেষ। এক্ষেত্রে অবশ্যই মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে। পূরণকৃত তথ্য সেন্ট্রাল ডাটাবেজে যুক্ত হওয়ার আগে থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদত্ত তথ্য যাচাই করে ‘অ্যাপ্রুভাল’ দিলে CIMS-এর মূল ডাটাবেজে তথ্য যুক্ত হবে। আর যদি কোনও কারণে ফরম পূরণ অসম্পূর্ণ হয় বা তথ্যে ভুল থাকে সেক্ষেত্রে এসএমএস দিয়ে জানানো হবে।
ম্যানুয়াল নিবন্ধন যেভাবে: ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্ধারিত নিবন্ধন ফরম প্রতিটি থানা ও ফাঁড়িতে পাওয়া যায়। নাগরিকরা সেখান থেকে ফরম নিয়ে পূরণ করে থানায় জমা দেওয়া যাবে। জমা দেওয়ার আগে ফরমের ফটোকপি নিজের কাছে রেখে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। ঢাকা মহানগরীর প্রতিটি থানাকে পাঁচ থেকে সাতটি বিটে ভাগ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ডিএমপির ৫০টি থানায় মোট ৩০২টি বিট রয়েছে। নির্দিষ্ট এলাকার একটি করে বিট নম্বর রয়েছে। নির্দিষ্ট বিটের নাগরিকদের অধিকতর পুলিশি সেবা দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই, এএসআইসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com