জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জমির বোরো ধান হিটশকে আক্রান্ত হয়েছে। সেসব এলাকায় পরবর্তী করণীয় হিসেবে জমিতে পানি ধরে রাখাসহ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন ধান বিশেষজ্ঞরা।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট বলছে, ধানের দানা শক্ত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২-৩ ইঞ্চি দাঁড়ানো পানি রাখতে হবে। এছাড়া প্রাথমিকভাবে বিএলবি বা বিএলএস রোগের আক্রমণ দেখা দিলে ৬০ গ্রাম এমওপি, ৬০ গ্রাম থিওভিট ও ২০ গ্রাম দস্তা সার ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে ৫ শতাংশ জমিতে বিকেলে স্প্রে করতে হবে। তবে ধানের থোড় বের হওয়ার আগে বিঘাপ্রতি অতিরিক্ত ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করলেও ভাল ফল পাওয়া যাবে। এ রোগ দেখা দিলে অবশ্যই ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে। সংস্থাটির নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, বোরো ধানের এ পর্যায়ে নেকব্লাস্ট রোগের আক্রমণ হতে পারে। তাই ধানের জমিতে এ রোগ হোক বা না হোক শীষের মাথা বের হওয়া পর্যায়ে ৫ শতাংশ জমিতে ৮ গ্রাম টুপার/৬ গ্রাম নেটিভভা/ট্রাইসাক্লাজল গ্রুপের অনুমোদিত ছত্রাকনাশক ১০ লিটার পানিতে ভালোভাবে মিশিয়ে বিকেলে ৫-৭ দিন অন্তর দুইবার স্প্রে করতে হবে।
গত রোববার সারাদেশে কালবৈশাখী ঝড়ের পাশাপাশি গরম বাতাস প্রবাহিত হয় বিভিন্ন এলাকায়। এরপর পর্যবেক্ষণ ও ক্ষতির কারণ পরিদর্শনকালে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, অধিকাংশ জমির ধান কাইচ থোড় থেকে ফুল আসা পর্যায়ে রয়েছে। যেসব জমির ধান ঝড়ের দিন ফুল ফোটা অবস্থায় ছিল তার কিছু কিছু জমির ৫-১০ শতাংশ শীষ প্রথমে সাদা ও পরবর্তীতে কালো বর্ণ ধারণ করে চিটা হয়ে গেছে। সবেমাত্র বের হওয়া শীষ উচ্চ তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা সংবেদনশীল থাকে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। এমতাবস্থায় শুষ্ক ও গরম বাতাস ঝড়ের বেগে প্রবাহের ফলে ধানের শীষ হতে পানি বের হয়ে শীষ চিটা হয়ে গেছে। যাকে হিটশক নামে অভিহিত করা হয়। তাছাড়া ঝড়ের কারণে পাতায় পাতায় ঘর্ষণের ফলে পাতায় ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে এবং সেখান দিয়ে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে পাতা পোড়া (বিএলবি) রোগ সৃষ্টি করেছে। ফলে পাতার অগ্রভাগ ও কিনারা মরা/খড়ের রঙ ধারণ করেছে।