মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন

মহেশখালী চ্যানেলের-জলপথের চাঁদাবাজি, অতিষ্ট জেলেরা

কাইছার হামিদ মহেশখালী :
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১

নৌ পুলিশের কাজ জলপথের অপরাধ দমন হলেও কক্সবাজারের মহেশখালী-বদরখালী নৌ-চ্যানেলে পুলিশের ডাঙ্গায়ও চাঁদাবাজিতে জেলে ও কাঁকড়া আহরণে নিয়োজিত জেলেরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। মহেশখালীর সীমান্তবর্তী এলাকা চকরিয়ার বদরখালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা মহেশখালীর নৌ-চ্যানেলে চাঁদাবাজিকেই তাঁদের কাজ হিসেবে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকা করে সাগর চ্যানেল থেকে মাছ আহরণ করা জেলে ও মহেশখালী ব্রীজের দক্ষিণ পাশে অস্থায়ী মৌসুমি ভিত্তিক কাঁকড়া ঘের থেকে তারা বিভিন্নভাবে নিয়মিত চাঁদা ওঠাচ্ছেন। টাকা দিতে রাজি না হলে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি নির্যাতনও চালানো হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সরকারী কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও পূর্বের কোন ঘোষণা ছাড়াই সাগরে অভিযান চালিয়ে জাল নিয়ে গিয়ে জব্দ করে রাখে। চাহিদা মত টাকা দিলে জাল ফেরৎ দেওয়া হয়। সম্প্রতি মহেশখালী-বদরখালী নৌ চ্যানেলে নৌ-পুলিশের চাহিদা মত মোটা অঙ্কের চাঁদা না দেওয়ায় কাঁকড়া ঘেরে অভিযানের নামে তান্ডব চালিয়ে ল-ভ- ও ভাংচুর করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এতে জেলে ও ব্যবসায়ীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে বদরখালী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ীর সদস্যরা পূর্বের কোন ঘোষণা ছাড়াই জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন জীবিকার তাগিতে যুগ যুগ ধরে করে আসা অস্থায়ী কাঁকড়া ঘেরে অভিযানের নামে উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর নলবিলা এলাকার নুরুল কবির, জয়সেন বড়ুয়া, সোনা মিয়া, সিদায়েন বড়ুয়া, আবুল হাশেম, মোহাম্মদ জসিম, রিয়াজ উদ্দিন, সমিরন বড়ুয়া চকরিয়ার বাসিন্দা সমিরন বড়ুয়া’রসহ ১০ থেকে ১৫ টি ভাসমান কাঁকড়া ঘের কেটে দিয়ে ভাংচুর করে গুঁড়িয়ে দে। এতে ঋন করে কাঁকড়া চাষ করা জেলেরা মারাত্মক ক্ষতির মূখে পড়েছে বলে তাদের অভিযোগ। এছাড়া মহেশখালীর ব্রীজের পূর্বপাশে অবস্থিত বাঁশ ব্যবসায়ী থেকে মাসিক হারে চাঁদা আদায় করেন নৌ-পুলিশ ফাঁড়ীর সদস্যরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগীরা জানায়, প্রায় এক যুগ আগে স্থাপিত বদরখালী নৌ পুলিশ ফাঁড়িটির কোনো ইনচার্জ কখনো গণহারে জেলে ও কাঁকড়া ব্যবসায়ী থেকে মাসোয়ারা তুলেছেন, এমন নজির নেই। কিন্তু কয়েক মাস আগে সাব ইন্সপেক্টর পদ মর্যাদার কর্মকর্তা আবুল কাশেম এ ফাঁড়িতে ইনচার্জ হিসেবে যোগ দেওয়ার পর থেকে টাকার জন্য প্রতিনিয়ত তিনি টহলের নামে নৌ-চ্যানেলের জেলেদের কাছে হানা দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমুদ্র মোহনাঘেঁষা মাতারবাড়ী -কোহেলিয়া চ্যানেলে নিরাপত্তায় রয়েছে মাতারবাড়ী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ী। বদরখালীর নিরাপত্তায় রয়েছে চকরিয়া থানার নিয়ন্ত্রণাধীন বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ি এবং চিংড়ি জোনের নিরাপত্তায় রয়েছে রামপুর পুলিশ ফাঁড়ি। নৌপথ তথা সমুদ্র উপকূলের নিরাপত্তায় কোস্ট গার্ড ও নৌ পুলিশ ফাঁড়ির দাপ্তরিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য বদরখালীতে কার্যালয় রয়েছে। নৌ পুলিশের কর্মকা- সমুদ্র উপকূলে সীমাবদ্ধ থাকলেও চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে তারা যেখানে-সেখানে হানা দিচ্ছে। বেপরোয়া চাঁদাবাজির অসংখ্য ঘটনায় ভুক্তভোগীরা উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে নালিশ করেও কিন্তু তারা কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে ও জানান। জেলেরা পুলিশের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন। তবে এসব অভিযোগ সত্য নয় দাবি করে বদরখালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর আবুল কাশেম বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছে, তারা মূলত অপরাধী। আমরা নদীতে এখন টহল দিয়না। তাই আমার বিরুদ্ধে এসব অবান্তর অভিযোগ করছেন তারা। ‘কাঁকড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগও সর্বৈব মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি। নদীতে কেউ প্রতিবন্ধিকতা করলে আমরা চাইলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারি। নৌ পুলিশের চট্টগ্রাম সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মাহবুবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, নৌ-পুলিশের অভিযান জোরদার থাকায় সাগরে অভিযান চালানো হচ্ছে। আর পুলিশ সদস্যরা যদি কোন স্থানে চাঁদাদাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com